ঢাকার পিলখানায় ২০০৯ সালের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের আগের দিন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ভেতরে গোপন বৈঠক ও হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনার বিষয়টি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। কমিশনের মতে, ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ৪৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের মাঠে সিপাহী মইনুদ্দিনের ডাকা বৈঠকে সিপাহী সেলিমসহ ১০–১২ জন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে দরবারের দিন অফিসারদের জিম্মি করতে রশি ও চাকু নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ, সেনা কর্মকর্তা হিসেবে তাঁরা আত্মরক্ষার চেষ্টা করবেন—এ কথা বিবেচনায় রেখেই অস্ত্র হিসেবে চাকু বহনের পরিকল্পনা করা হয়।
প্রতিবেদনে জানা যায়, একই রাতেই লে. কর্নেল শামস সিপাহী সেলিম ও মইনুদ্দিনকে ডেকে পাঠান। তিনি তাঁদের জানান যে পরদিন কোয়ার্টার গার্ডে মেজর রিয়াজ ডিউটিতে থাকবেন এবং সেখানে গেলে তিনি অস্ত্র সরবরাহ করবেন।
তদন্ত প্রতিবেদনের ৬৫ নম্বর সাক্ষী জানান, সেন্ট্রাল কোয়ার্টার গার্ডে ২৪, ৪৪ ও সদর ব্যাটালিয়ন—এই তিন ব্যাটালিয়নের অস্ত্র রাখা হতো। ঘটনার আগে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকেই উচ্চ সতর্কতায় অফিসাররা কোয়ার্টার গার্ডে ডিউটি করছিলেন। জিএসও–২ (আই) মেজর মাহমুদ উড়ো চিঠির বিষয়টি উল্লেখ করে অতিরিক্ত সতর্কতার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস ও কলঙ্কজনক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত। ১১ মাসের তদন্ত শেষে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
