পটুয়াখালীর বাউফলে জাল কাগজ তৈরি করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক পরিচয় তুলে বিএনপি কর্মী ফয়সাল পঞ্চায়েতকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল তাকে আটক করে। পরে ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে দায়ের করা একটি রাজনৈতিক মামলায় আদালতে সোপর্দ করলে ফয়সালকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাউফল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অফিসিয়াল প্যাড ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দপ্তর সম্পাদকের স্থানে ফয়সালের নাম লেখা ছিল। ইউএনও আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি খাস জমির বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পরই ফয়সালকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, এক বছরের জন্য খাস জমি চাষাবাদের অনুমতি দিতে ইউএনওর সহযোগী হিসেবে ফয়সালসহ কয়েকজন কাজ করেছেন। এরপর থেকেই স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে তার নাম সামনে আসে।
গ্রেফতার ফয়সালের বোন মিম্মি পঞ্চায়েত দাবি করেন, তাদের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং ফয়সাল কখনোই স্বেচ্ছাসেবক লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। পারিবারিক জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ মোচন পঞ্চায়েত জাল কাগজ তৈরি করে তার ভাইকে আওয়ামী লীগ নেতার পরিচয়ে ফাঁসিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ফয়সালের চাচাতো ভাই রিয়াজ পঞ্চায়েত জানান, ফয়সাল কালাইয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সদস্য এবং নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশী। তিনি অভিযোগ করেন, একটি চক্র তাদের পরিবারের একাধিক সদস্যকে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা পরিচয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে।
অন্যদিকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক দায়িত্বশীল নেতা জানান, ভাইরাল হওয়া প্যাডটি আসল হলেও দপ্তর সম্পাদকের স্থানে ফয়সালের নামটি ‘সুপার এডিটিং’-এর মাধ্যমে বসানো হয়েছে। তার দাবি, আসল দপ্তর সম্পাদক জসিমের নাম মুছে ফয়সালের নাম যুক্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত মোসলেম পঞ্চায়েত ওরফে মোচন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি কাউকে ফাঁসানোর সঙ্গে জড়িত নন এবং জমি দখল সংক্রান্ত বিরোধীরাই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বাউফল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম জানান, ফয়সালের গ্রেফতারের বিষয়টি প্রথমে থানা পুলিশ জানত না। ডিবি আটকের পর তারা বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি আরও জানান, ফয়সালের রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই করে আদালতকে অবহিত করা হবে।
