পাকিস্তান বাংলাদেশ ও চীনকে নিয়ে নতুন একটি ত্রিদেশীয় জোট গঠনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইশহাক দার জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের পরিধি আরও বাড়ানো সম্ভব এবং প্রয়োজনে অঞ্চল বাইরে থাকা দেশগুলোকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। বুধবার ইসলামাবাদ কনক্লেভ ফোরামে তিনি বলেন, পাকিস্তান সবসময় সংঘাতের বদলে সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে এবং আঞ্চলিক উন্নয়নকে কারও অনমনীয়তার কাছে জিম্মি হতে দিতে চায় না।
তার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়, ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনায় বহু বছর ধরে অকার্যকর সার্কের বিকল্প কোনো কাঠামো গঠনে পাকিস্তান নতুন করে ভাবছে। গত জুনে চীন–পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কূটনীতিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পরেই বিষয়টি গুরুত্ব পেতে শুরু করে। ওই বৈঠকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জীবনমান নিয়ে আলোচনা হয়।
দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের এই প্রস্তাব এসেছে। ভারত–পাকিস্তানের চার দিনের যুদ্ধ, বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ব্যবস্থায় জটিলতা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে। বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত না দেওয়ায় ঢাকা–দিল্লি সম্পর্কে অস্থিরতা বেড়েছে।
১৯৮৫ সালে গঠিত সার্ক ভারত–পাকিস্তান বৈরিতার কারণে চার দশকেও কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে পারেনি। ২০১৬ সালের পর আর কোনো সার্ক সম্মেলন হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সার্ক অকার্যকর হয়ে পড়ায় দেশগুলো ছোট ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক বিকল্প জোটের দিকে ঝুঁকছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই নতুন উদ্যোগ আঞ্চলিক সহযোগিতার বিকল্প কাঠামো তৈরি করতে পারে, যদিও এতে অংশগ্রহণ দেশগুলোর জন্য নতুন রাজনৈতিক ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। কেউ কেউ মনে করেন, প্রস্তাবটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী হলেও প্রয়োজনীয়; আবার অনেকে মনে করেন, দক্ষিণ এশিয়ার জটিল ভূরাজনীতিতে এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন সহজ নয়। সফল হলে এটি ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরও সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং ভারত–চীনের প্রতিযোগিতাও বাড়তে পারে।
