ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হলেই পদত্যাগ করতে চান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণ তাঁকে অপমানিত করেছে—রয়টার্সকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার বঙ্গভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারেই রাষ্ট্রপতি তাঁর ক্ষোভ ও অভিজ্ঞতার নানা দিক তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রপতির পদ সাংবিধানিকভাবে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কের হলেও বাস্তবে নির্বাহী ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে। সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন এবং শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। দলটির কার্যক্রম স্থগিত থাকায় আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না আওয়ামী লীগ।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, “আমি চলে যেতে আগ্রহী। আমি বেরিয়ে যেতে চাই। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমি থাকছি, কারণ সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করতে হবে।” দায়িত্ব নেওয়ার পর গণমাধ্যমে এটিই তাঁর প্রথম সাক্ষাৎকার।
সাহাবুদ্দিনের অভিযোগ, প্রায় সাত মাস ধরে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। একই সঙ্গে তাঁর প্রেস বিভাগ সরিয়ে রাখা হয়েছে এবং সেপ্টেম্বরে দেশের সব কনস্যুলেট ও দূতাবাস থেকে তাঁর সরকারি প্রতিকৃতি রাতারাতি সরানো হয়েছে।
তিনি বলেন, “এতে জনগণের কাছে ভুল বার্তা গেছে—মনে হয়েছে হয়তো আমাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আমি গভীরভাবে অপমানিত বোধ করেছি।” প্রতিকৃতি সরানোর বিষয়ে তিনি ইউনূসকে লিখিতভাবে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন রাষ্ট্রপতি। তাঁর ভাষায়, “আমার কণ্ঠরোধ করা হয়েছে।”
রয়টার্স জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ ছাড়া সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
