সুদানের চলমান সংঘাতে ব্যবহৃত চীনা সামরিক ড্রোন ঘিরে একটি জটিল ও গোপন আন্তর্জাতিক সরবরাহ নেটওয়ার্কের তথ্য প্রকাশ করেছে অনুসন্ধানী সংস্থা Africa Intelligence। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদানের র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF) যে ড্রোনগুলো ব্যবহার করছে, সেগুলো সরাসরি চীন থেকে সরবরাহ করা নয়; বরং এসব ড্রোনের সংযোজন, পরিবর্তন ও আংশিক পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে ইউরোপের দেশ সার্বিয়ায়।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে RSF ব্যবহৃত একটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ড্রোনগুলো চীনের CH-92 ও CH-95 মডেলের হলেও এতে সার্বিয়ায় করা কারিগরি হস্তক্ষেপের স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। ড্রোনের সিরিয়াল নম্বর, হার্ডপয়েন্টের নকশা—যেগুলো প্রথম প্রকাশ পায় সার্বিয়ার ২০২৩ সালের একটি সামরিক প্রদর্শনীতে—এছাড়া ২০২৩ সালের তারিখযুক্ত বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং চেক প্রজাতন্ত্রের Woodcomp প্রপেলার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, চীনের বাইরে অন্য কোনো দেশে ড্রোনগুলোর সংযোজন ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তন সম্পন্ন হয়েছে।
Africa Intelligence জানায়, ড্রোনগুলো প্রথমে সার্বিয়ায় সংযোজনের পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে আফ্রিকার দিকে পাঠানো হয়। এরপর লিবিয়া বা কেনিয়ার রুট ব্যবহার করে সেগুলো সুদানে পৌঁছে এবং শেষ পর্যন্ত নিয়ালা বিমানবন্দর দিয়ে RSF-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এই গোপন সরবরাহ চেইনের মাধ্যমে RSF উন্নত মানববিহীন যুদ্ধবিমান (UCAV) ব্যবহারের সক্ষমতা অর্জন করেছে, যার ফলে এল-ফাশের ও বাবনুসা এলাকায় মারাত্মক বিমান হামলা চালানো সম্ভব হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সার্বিয়াকে একটি মধ্যবর্তী স্বাধীন সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে ড্রোন সংযোজন ও পুনর্নির্মাণের এই কৌশল আন্তর্জাতিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও নিষেধাজ্ঞা কাঠামোর জন্য নতুন ও গুরুতর চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
