ঢাকায় ১৯ জুলাই অনুষ্ঠেয় জাতীয় সমাবেশ ঘিরে চারটি স্পেশাল ট্রেন ভাড়া করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, দলটির নিজস্ব অর্থায়নে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ ভাড়া পরিশোধ করে এসব ট্রেন বুকিং দেওয়া হয়েছে।
স্পেশাল ট্রেনগুলো চলবে ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-সিরাজগঞ্জ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে। চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা করা ট্রেনটি ছাড়বে ১৮ জুলাই রাত ১০টায় এবং ফিরতি যাত্রা করবে ১৯ জুলাই বিকেল ৪টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে।
চট্টগ্রামগামী ট্রেনে মোট আসন ১ হাজার ৭২টি। এর মধ্যে কয়েকটি এসি বগিও রয়েছে। রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ জানিয়েছে, স্পেশাল ট্রেন হওয়ায় স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে ১০ শতাংশ এবং এসি বগির ক্ষেত্রে ২০-৩০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়েছে। সবমিলিয়ে শুধু চট্টগ্রামের ট্রেন থেকেই রেলওয়ের আয় হবে ১২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে চারটি ট্রেন থেকে অর্ধকোটি টাকা আয় করবে রেলওয়ে।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ফরিদ আহমেদ বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী যে কেউ ট্রেন ভাড়া নিতে পারে। জামায়াতও নিয়ম মেনে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ট্রেন নিয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) তৌষিয়া আহমেদ জানান, ‘আবেদন পাওয়ার পর নিয়ম মেনেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সব বুকিং চূড়ান্ত।’
জামায়াত সূত্র বলছে, স্পেশালট্রেন ছাড়াও চট্টগ্রামের কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকেও ভাড়ায় চালিত অসংখ্য বাসে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাবেন।
দলটির এক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘১৯ জুলাইয়ের সমাবেশ আমাদের রাজনৈতিক পুনর্জন্মের মঞ্চ। এটি শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জানানোর সুযোগ।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এবার প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলীয়ভাবে সমাবেশ করছি। এটি জামায়াতের জন্য যেমন তাৎপর্যপূর্ণ, তেমনি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে।’
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগরীসহ প্রতিটি জেলার সাংগঠনিক ইউনিটকে পরিবহন, থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। জামায়াতের সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তৃণমূলে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াতের রাজনৈতিক সক্রিয়তা নতুনভাবে দৃশ্যমান হবে। একই সঙ্গে বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব ঘোচানো এবং অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য গড়ার প্রচেষ্টারও অংশ এটি।
সবমিলিয়ে, ১৯ জুলাইয়ের সোহরাওয়ার্দী সমাবেশ জামায়াতের জন্য একটি পরীক্ষার মঞ্চ, যেখানে দলটি প্রমাণ করতে চায়— তারা এখনো মাঠে আছে, এবং তাদের শিকড় মাটি থেকে উপড়ে ফেলা যায়নি।