পটুয়াখালীর বাউফলে বিজয় মিছিলে যোগ দেওয়ায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী ফারুক হাওলাদারকে (৬০) মারধরের অভিযোগ উঠেছে জসিম পঞ্চায়েত নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। মারধরের সময় ওই বিএনপি নেতা ভুক্তভোগীকে ‘জামায়াত করতে হলে এলাকা ছাড়তে হবে’ বলে হুমকি দেন। মারধরে আহত ফারুক হাওলাদারকে বাউফল উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত বুধবার (৬ আগষ্ট) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের আয়নাবাজ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত জসিম পঞ্চায়েত কালাইয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফারুক হাওলাদার বলেন, ঢাকায় জামায়াতের ঐতিহাসিক সমাবেশে আমি যোগদান করার পর থেকে ওই বিএনপি নেতার টার্গেটে পড়ি। গত ৫ আগস্টে বাউফলে জামায়াতের আনন্দ মিছিলে যোগদান করায় আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন সকালে বিএনপি নেতা জসিম পঞ্চায়েত ও তার লোকজন আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। একইসাথে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জামায়াত কর্মী ফারুক বলেন, আমাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে কুকুরের মতো মারছে ওরা। আমি অসুস্থ আমাকে মারিস না বলার পরেও তারা থামেনি। আমাকে পুরো শরীরে আঘাত করা হয়েছে। আমার অন্ডকোষে লাথি দেয়ায় আমি মারাত্মক যন্ত্রণা সহ্য করতেছি। আমাকে ওরা হুমকি দিয়েছে যে- ‘তুই জামায়াত করিস তুই আজকে দিনের মধ্যে কালাইয়া ছাড়বি। তা না হলে তোকে মেরে ফেলব।’
আহত ফারুকের স্ত্রী বিউটি বেগম (৫৫) বলেন, আমার স্বামী নানা রোগে আক্রান্ত। আমার স্বামীকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে বিএনপি নেতা জসিম পঞ্চায়েত। এ সময় সে হুমকি দিয়ে বলে, ‘আজকে দিনের মধ্যে দেশ ছাড়বি। কালাইয়ায় কোনো জামায়াতের রাজনীতি চলবে না। তোরা যদি দেশ না ছাড়িস তাহলে তোদের খবর আছে।’ আমরা এই ঘটনায় প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি এখন।
কালাইয়া ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ড জামায়াতের সহ-সভাপতি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক তাসনিম আলম বলেন, দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা বিভিন্ন দাওয়াতি কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করি। বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে প্রতিনিয়ত বাধা দিচ্ছে। আমাদের সাংগঠনিক কাজ করতে দিচ্ছে না। তারা বলছে, আয়নাবাজে কোনো জামায়াত থাকতে পারবে না। এমনকি জামায়াতের নারী সদস্যদের তারা গণধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছে। আমরা জীবন ঝুঁকিতে আছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি জসিম পঞ্চায়েত বলেন, ‘ফারুক হাওলাদার আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মী ছিল। তাকে আমি বলেছি এখন বিএনপি করো। তুমি জামায়াত করবা কেন? কিন্তু তিনি আমার কথায় রাজি হয়নি। তিনি জামায়াতের রাজনীতিই করছিল। এটি নিয়ে তার সাথে উচ্চবাচ্য হয়েছিল। তবে তাকে আমি মারিনি।’
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’