বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ অভিযোগ করেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জীবন ও রক্ত দেওয়া আলেমদের ভূমিকা জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) শ্যামপুর-কদমতলী জোন আয়োজিত উলামা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আলেমদের রক্ত ঝরেছে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের লগি-বইঠার তাণ্ডবে কুরআনের হাফেজ ও আলেমদের হত্যাকাণ্ড কিংবা ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে আলেমদের ওপর চালানো গণহত্যা জাতি ভুলে যায়নি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান এবং ৪ আগস্ট গণভবনের অভিমুখে যাত্রার ক্ষেত্রেও আলেমদের ভূমিকা ছিল অগ্রণী। আলেমরা মসজিদের পথে নয়, বরং জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে জীবন বাজি রেখে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই ভূমিকা জুলাই সনদে উল্লেখ করেনি।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ‘সবার কথা লেখা যায় না’। এর মানে ঐকমত্য কমিশন আলেমদের অবদান খাটো করে দেখছে। অথচ জুলাই সনদে যদি মাত্র এক লাইনও যোগ হয়, তা আলেমদের নিয়েই লেখা উচিত।
এসময় তিনি আরও বলেন, যুগে যুগে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের কথা বলার কারণে আলেমদের ওপর নির্যাতন নেমে এসেছে। যারা এখন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মরিয়া, তারা সুযোগ পেলে আলেমদের ওপর আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ জুলুম চালাবে। তাই আলেম-ওলামাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির সামনে ভূমিকা রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন বলেন, আওয়ামী লীগ ইসলাম ও আলেমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তবে আলেম সমাজের আত্মত্যাগে ফ্যাসিবাদী শক্তি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। এখনো জাতি পূর্ণ বিজয় পায়নি। এজন্য আসন্ন নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে ভোট দিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ও ঢাকা-৬ আসনে প্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর বৈষম্যহীন কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে উলামাদের এগিয়ে আসতে হবে।
মহানগরীর উলামা সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মোশারফ হোসাইন বলেন, আলেমদের ঐক্যই ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রধান শক্তি। ইসলামবিদ্বেষীরা এ ঐক্য ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে, তবে উলামাদের দৃঢ় ঐক্যের মাধ্যমে সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ জয়নুল আবেদীন এবং পরিচালনা করেন কদমতলী মধ্য থানা আমীর মুহাম্মদ মহিউদ্দিন। শুরুতে দারসুল কোরআন পেশ করেন তা’লীমুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুফতি মহিউদ্দিন।