বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা ও তথ্য কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থা Centre for Research and Information (CRI) নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় গবেষণা, নীতি নির্ধারণ ও প্রচারণার দায়িত্বে থাকা এই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
৫ আগস্টের পর CRI অফিসে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW-এর উপস্থিতির প্রমাণ সামনে আসার পর বিষয়টি নতুন মাত্রা পায়। রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের শেষ প্রান্তে অবস্থিত এই অফিসটিকে দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের তথ্যযুদ্ধ ও প্রোপাগান্ডা কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছিল।

CRI-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ভাইস-চেয়ারপারসন তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। এছাড়া শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং প্রাক্তন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী নাসরুল হামিদ বিপু ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য।
প্রোপাগান্ডা ও আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ
আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান Meta (Facebook) তাদের Adversarial Threat Report-এ CRI-সংশ্লিষ্ট একটি নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করে, যা নির্বাচন ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতো। ২০২৫ সালে Meta প্ল্যাটফর্ম থেকে CRI-সংযুক্ত প্রায় ৫০টি অ্যাকাউন্ট ও ৯৮টি পেজ অপসারণ করা হয়।

তদুপরি, অ্যান্টি-করাপশন কমিশন (ACC) জানিয়েছে, CRI-এর নামে IFIC ব্যাংকে প্রায় ৩৫২.১ মিলিয়ন টাকার একটি FDR পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, CRI-এর মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে জনসমর্থন তৈরিতে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, CRI নিয়ে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে এটি শুধু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভাবমূর্তিকেই নয়, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করবে।