পলাতক আওয়ামী ক্যাডারদের নাশকতা প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সাদেকুল হকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনের পরিবার প্রজন্ম ধরে কট্টর আওয়ামী ঘরানার পরিচিত। সরেজমিন অনুসন্ধানে এ পরিবারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকা, সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন ও লালন, সরকারি জলাশয় দখল, চাঁদাবাজি এবং বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করার মতো নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জাফরিন সেনাবাহিনীর সাবেক জিওসি ও পিজিআরের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর হারুনের কন্যা। তার বাবা খলিলুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হলেও স্থানীয়দের মতে তিনি যুদ্ধে সরাসরি অংশ নেননি; বরং ভারতের ক্যাম্প থেকে সশস্ত্র গ্রুপ পরিচালনা করে সীমান্ত এলাকায় খুন-খারাবির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। শার্শার বিভিন্ন গ্রামে বহু হত্যাকাণ্ডের জন্য তার গ্রুপকে দায়ী করা হয়।
এই পরিবারের রাজনৈতিক প্রভাব স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও স্পষ্ট। জাহাঙ্গীর হারুনের ভাইপো একেএম ফজলুল হক বকুল ও আসাদুজ্জামান মুকুল দু’জনেই ডিহি ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, বকুল ও মুকুল ক্ষমতায় থেকে বড়সড় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন, যাদের মাধ্যমে নদী ও জলাশয় দখল, বিরোধীদলীয় নেতাদের ওপর হামলা এবং ভুয়া মামলা দেওয়া হতো। বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় নেতারা দাবি করেন, এসব কর্মকাণ্ডের ফলে বহু পরিবার দীর্ঘদিন ঘরছাড়া ছিল।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সুমাইয়া জাফরিনের বাবা জাহাঙ্গীর হারুন আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে আসাদুজ্জামান মুকুলকে কারচুপির মাধ্যমে বিজয়ী করার পেছনেও তার প্রভাব কাজ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
যদিও বকুল চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে স্থানীয় বিএনপি ও সাধারণ মানুষ বলছেন, আওয়ামী শাসনামলে এ পরিবার রাজনৈতিক সন্ত্রাস, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ দখলদারির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল।