ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ বলেছেন, ডাকসু শিক্ষার্থীদের আত্মার সঙ্গে মিশে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমন্বিতভাবে একটা বিষয়ে একমত, সেটি হলো ডাকসু সময়মতো হতে হবে। এখন কেউ যদি ডাকসু বানচাল করতে চায়, তাদের অস্তিত্ব থাকবে না।
বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফরহাদ এ কথা বলেন। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আপিল বিভাগের আদেশ এবং প্যানেলের প্রচারণার বিষয়ে তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুতে এই প্যানেলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক প্রার্থী জসীমউদ্দিন খান, সদস্য প্রার্থী রায়হান উদ্দীন বক্তব্য দেন। পরে জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ প্যানেলের পক্ষে বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরেন।
ডাকসু নিয়ে আদালতের আদেশের বিষয়ে ফরহাদ বলেন, ‘একজন প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। তাঁর দ্বিমতের প্রতি আমি সব সময় শ্রদ্ধাশীল ছিলাম। চব্বিশ-পরবর্তী সময়ে আইনের শাসনের প্রতি আমি বিশ্বাসী, শ্রদ্ধাশীল। সর্বোচ্চ আদালত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছেন। ডাকসু বানচাল হওয়ার যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, সেই জায়গা থেকে আদালত নির্বাচন বহাল রেখেছেন। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এতে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে।’
এই রিটে কেউ হারেনি উল্লেখ করে এস এম ফরহাদ বলেন, ‘আমি মনে করি, এই রিটে কেউ হারে নাই। তিনি জিতেছেন বা আমি জিতেছি—এমনটা নয়। ডাকসুটা সময়মতো হচ্ছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে। ঠিক সময়ে ডাকসু নির্বাচন হওয়াটাই বড় কথা। কে জিতেছে, কে হেরেছে—এই বিশ্লেষণ এখানে হওয়া উচিত না।’
ডাকসু নিয়ে অনেক কাদা-ছোড়াছুড়ি হয়েছে উল্লেখ করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এই নেতা বলেন, ‘পাল্টাপাল্টি অনেক অভিযোগ পড়েছে, এসব আমরা ছেড়ে দিই। এসব আলাপ বাদ দিয়ে আমরা সবাই ডাকসু নির্বাচনটা ঠিকভাবে করি, সবাই প্রতিযোগিতা করি। শিক্ষার্থীরা তাদের ভোট দিক। যিনি জিতবেন, তিনি সবার প্রতিনিধি হয়ে ভূমিকা পালন করবেন। যিনি জয়ী হবেন, তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে সংস্কার করবেন। সেই জায়গাটিতে সবাই মিলে আমরা অংশগ্রহণ করি। সেই জায়গাটা থাকবে বলে বিশ্বাস করি।’
রিটকারী প্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার পর সব পক্ষই এটিকে নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছিল বলে মন্তব্য করেন এস এম ফরহাদ। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনীতির জায়গায় না এসে সঙ্গে সঙ্গে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করেছে। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও ব্যবস্থা নেবে। নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানির বিষয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স। ভিকটিম শিক্ষার্থী যেই মতাদর্শেরই হোক না কেন, তার প্রতি কোনো অবিচার হলে আমরা সোচ্চার থাকব।’
ছাত্রী হলে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন দাবি করে এস এম ফরহাদ বলেন, ‘আমরা ছাত্রীদের হলে হলে প্রজেকশন মিটিং করছি। ছাত্রীদের কাছ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পাচ্ছি। তাদের কনসার্ন আমরা শুনেছি। অনেক পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলো আমরা নোট নিয়েছি। জগন্নাথ হলে আমরা গিয়েছি। সেখানে তাদের দ্বিমতগুলো আমরা শুনেছি। আমাদের ভুল কিছু থাকলে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সেগুলো সংশোধন করতে চাই। আবার তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এভাবেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’