কার্যক্রমে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ সম্প্রতি একের পর এক ঝটিকা মিছিল করছে। দিন দিন এসব মিছিলের আকারও বড় হচ্ছে। সর্বশেষ শুক্রবার রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা তেজগাঁওয়ে দলটির হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী অংশ নেন একটি মিছিলে, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ পরিস্থিতিতে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—গোয়েন্দারা কীভাবে রাজধানীর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিষিদ্ধ একটি দলের এমন কার্যক্রমের আগাম খবর পায় না।
মিছিল আয়োজন ও আর্থিক সহায়তার অভিযোগে সাবেক এমপি সাদ্দাম হোসেন পাভেলসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার জুমার নামাজের পর তেজগাঁও নাবিস্কো এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। এ সময় প্রায় হাজারখানেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সকালে একই এলাকায় আরেকটি মিছিল ঠেকাতে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ামুল হাসানকে আটক করা হয়। দুপুরের মিছিল শেষে সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করা হয়। একই দিনে ধানমন্ডিতেও ঝটিকা মিছিল হয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি।
গত কয়েক সপ্তাহে বনানী, ধানমন্ডি, গুলিস্তানসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসব মিছিল ঠেকাতে না পারায় প্রশাসনের কার্যকারিতা ও গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এসব মিছিলের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। তেজগাঁওয়ের এক বাসিন্দা বলেন, “নামাজ পড়ে বেরিয়ে দেখি হঠাৎই আওয়ামী লীগের মিছিল। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। প্রশ্ন হলো, নিষিদ্ধ একটি দলের এত বড় মিছিল কীভাবে হয়, গোয়েন্দারা কি কিছুই জানে না?”
অন্যদিকে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিষ্ক্রিয় নয়; বরং নাশকতার পরিকল্পনা ভণ্ডুল করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) শাহাদাত হোসেন বলেন, “নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে আরও কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে অভিযোগ রয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পরও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বেড়েই চলেছে এবং প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।