ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর গোলা ও বোমাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৯৮ জন নিহত এবং ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। সরঞ্জাম ও জনবল সংকটের কারণে তাদের উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৫ হাজার ৬২ জন নিহত এবং এক লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন আহত হয়েছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গত ১৯ জুন দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, ইসরায়েল ১৮ মার্চ তা ভেঙে নতুন করে হামলা শুরু করে। এরপর থেকে পাঁচ মাসে প্রায় ১২ হাজার ৫১১ জন নিহত এবং ৫৩ হাজার ৬৫৬ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া, মে মাসের শেষ দিক থেকে খাদ্য ও ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ২৭ মে প্রথমবারের মতো এ ধরনের হামলা চালানো হয়, এরপর থেকে এটি নিয়মিত ঘটছে। বুধবারও ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালালে ৭ জন নিহত এবং ৮৭ জন আহত হন। এ পর্যন্ত এ ধরনের হামলায় ২,৫০৪ জন নিহত এবং ১৮,৩৪৮ জন আহত হয়েছেন।
খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহও গত ২ মার্চ থেকে সীমিত করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে গাজায় খাদ্য সংকট ও অপুষ্টি চরম আকার ধারণ করেছে। বুধবার ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ৪ জন মারা যান। প্রায় দুই বছরে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩২ জনে, যাদের মধ্যে ১৪৬ জন শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরু করে। এতে ১,২০০ জন নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এখনও অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন জিম্মি জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ দুর্বল করা এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।