ঝিনাইদহে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সার কেলেংকারি ঘটানোর পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর পেছনে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) ঝিনাইদহ জেলা কমিটির সভাপতি হাজী জাহাঙ্গীরকে মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে অবৈধ মজুতের মাধ্যমে তিনি কৃষকদের মাঝে অস্থিতরতা তৈরির চেষ্টা করছেন।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জেলায় পর্যাপ্ত সার মজুত থাকলেও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী সার দেওয়া হচ্ছে না। এর মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চক্র বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র করছে।
স্থানীয় কৃষক ও ডিলারদের অভিযোগ, হাজী জাহাঙ্গীর গুদামে বিপুল পরিমাণ সার মজুত রেখে কৃষকদেরকে তা দিচ্ছেন না। সাকিব হোসেন নামে এক কৃষক অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, জাহাঙ্গীর ইচ্ছাকৃতভাবে সংকট সৃষ্টি করে কালোবাজারে উচ্চমূল্যে সার বিক্রি করছেন। এ ঘটনায় কৃষকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
ডিলাররাও অভিযোগ তুলেছেন হাজী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। কালীগঞ্জের দাউদ হোসেন জানান, ২০১৪ সালে সংগঠনের জমি কেনার জন্য ৩২ লাখ টাকা তুলে দেওয়া হলেও তিনি সেই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। সদর উপজেলার আব্দুল হান্নান ও কোটচাঁদপুরের নাছির উদ্দীনেরও একই অভিযোগ রয়েছে। তাদের দাবি, জাহাঙ্গীর দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সমিতিকে নিজের দখলে রেখেছেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী ডিলার মিলন ঘোষের লাইসেন্স বাতিল করিয়েছেন এবং ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। পরবর্তীতে আদালতের রায়ের মাধ্যমে মিলন তার লাইসেন্স ফিরে পান।
হাজী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ নিয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নূর এ নবী জানান, অভিযোগ তদন্ত চলছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, “অবৈধ মজুতের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”