খুলনা রেলস্টেশনের ডিজিটাল বোর্ডে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর হঠাৎ ভেসে ওঠে বার্তা— “ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। শেখ হাসিনা আবারও আসবে।”
জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেড় বছর পেরোলেও নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ নিয়মিত তাদের উপস্থিতির জানান দিচ্ছে। মহানগরীর আট থানায় মিছিল করেছে তারা। এসব ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১২টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি তাদের রয়েছে।
অর্থ আসছে বিদেশ থেকে
গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র বলছে, আন্দোলন টিকিয়ে রাখতে কলকাতা ও সিঙ্গাপুর থেকে অর্থ পাঠানো হচ্ছে। সম্প্রতি আটক নগর ছাত্রলীগ নেতা বায়েজিদের মোবাইল ফোনে প্রমাণও মিলেছে। তিনি নগরীর ১১২ কর্মীকে টাকা বিতরণ করেছেন। সিঙ্গাপুরপ্রবাসী মাহফুজ খন্দকারকে সবচেয়ে বড় অর্থদাতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দারা।
আলোচিত নেতাদের অবস্থান
সদর থানা আ.লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম: জুলাই অভ্যুত্থানে প্রকাশ্যে শটগান চালিয়েছিলেন, এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন।
জেলা আ.লীগ যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল: ফেসবুকে সক্রিয় থেকে কর্মীদের উৎসাহ দিচ্ছেন।
মহানগর যুবলীগ সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ: অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে আড়ালে থেকেও সক্রিয়।
পাশাপাশি একাধিক সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতারা আত্মগোপনে থাকলেও অনুসারীরা খোলাখুলি সক্রিয়।
আটক-জামিনের খেলা
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের যেসব নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন, তারা অধিকাংশই জামিনে বেরিয়ে গেছেন। আইনজীবী মহলে এ নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে যে, বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের সহায়তা নিয়ে তারা সহজেই মুক্ত হচ্ছেন।
পুলিশের অবস্থান
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার জানান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। প্রথম সারির নেতারা এলাকায় নেই। অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন, আবার কেউ টাকা দিয়ে মিছিলে অংশ নিয়েছেন। ফেসবুকে ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে মিছিলকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছি।”