২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দেশের বৃহত্তম ও সবচেয়ে সফল বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ইসলামী ব্যাংককে তৎকালীন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগিতায় জোরপূর্বক ও অবৈধভাবে অধিগ্রহণ করে এস আলম গ্রুপ। এরপর থেকেই ব্যাংকটির সুনাম, স্থিতিশীলতা ও আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটতে শুরু করে।
অধিগ্রহণের পর এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম কোনো প্রকার নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই গণহারে নিয়োগ দেন। নিয়োগপ্রাপ্তদের বেশিরভাগই ছিলেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা। এমনকি অনেকে ব্যাংকে চাকরির ন্যূনতম যোগ্যতাও অর্জন করেননি। শুধুমাত্র আঞ্চলিক পরিচয়ের কারণে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়ার ফলেই ইসলামী ব্যাংকের দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুরু করে।
এস আলম গ্রুপ ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকিং নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার ঋণ গ্রহণ করে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করা হয়নি। ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকটির মূলধন কাঠামো নড়বড়ে হয়ে পড়ে।
দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর ৩২ বছরে কখনো এ ধরনের সঙ্কটে পড়েনি। কিন্তু এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আসার পর ব্যাপক ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে ব্যাংকটিতে বিশাল অঙ্কের প্রভিশন ঘাটতি তৈরি হয়। এর ফলে ব্যাংকটি লভ্যাংশ প্রদানের সক্ষমতাও হারিয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ইসলামী ব্যাংকের চলমান সঙ্কটের সব দায়ভার এস আলম গ্রুপের অবৈধ দখল ও লুটপাটের ওপরই বর্তায়। একটি স্বচ্ছ ও ন্যায্য সংস্কার ছাড়া ব্যাংকটির সুনাম ও আর্থিক অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয় বলে তারা মনে করছেন।