পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি এবং দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি নতুন পদক সম্মানে ভূষিত হতে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক এশিয়া কাপ ফাইনালে ট্রফি বিতরণের ঘটনায় তার নীতিনিষ্ঠ ও সাহসী অবস্থানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে প্রদান করা হবে ‘শহীদ জুলফিকার আলী ভুট্টো এক্সেলেন্স গোল্ড মেডেল’।
শনিবার (৪ অক্টোবর) হিন্দুস্তান টাইমস-এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিন্ধ ও করাচি বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট গুলাম আব্বাস জামাল এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক ও ক্রীড়াগত উত্তেজনার মুহূর্তে মহসিন নাকভির পদক্ষেপ জাতীয় মর্যাদা পুনরুদ্ধার করেছে।”
ফাইনাল বিতর্ক ও নাকভির সিদ্ধান্ত
এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতীয় ক্রিকেটাররা নাকভির কাছ থেকে ট্রফি নেওয়া অস্বীকার করেন, যা রাজনৈতিক সংকেত হিসেবে দেখা হয়। এরপর নাকভি নিজেই ট্রফি নিজের কাছে রেখে দেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, “ভারতের দল চাইলে আনুষ্ঠানিকভাবে এএসিসির প্রধান কার্যালয় থেকে ট্রফি নিতে পারে। আমি কোনো ভুল করিনি, এবং বিসিসিআই-এর কাছে ক্ষমাও চাইব না।”
নাকভির এই অবস্থান পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেকেই এটিকে জাতীয় মর্যাদা ও দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে দেখছেন।
পদক প্রদান অনুষ্ঠান
করাচিতে আনুষ্ঠানিকভাবে পদক প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তার সময়সূচি নিশ্চিত হলে তারিখ ঘোষণা করা হবে। অনুষ্ঠানের তদারকিতে গঠিত হয়েছে বিশেষ কমিটি, যার প্রধান সিন্ধ বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান খালিদ জামিল শামসি, আর কমিটির সচিব করাচি কমিশনারের ক্রীড়া পরিচালক গুলাম মুহাম্মদ খান।
এই প্রসঙ্গে গুলাম আব্বাস জামাল বলেন, “এটা শুধু ক্রিকেট নয়; এটি মর্যাদা, সার্বভৌমত্ব এবং চাপের মুখে মাথা না নোয়ানোর প্রতীক।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
এশিয়া কাপজুড়ে ভারত-পাকিস্তান মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রবল ছিল। ভারতীয় দল পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সঙ্গে ‘নো হ্যান্ডশেক’ নীতি বজায় রাখে। ফাইনালে জয় সত্ত্বেও তারা ট্রফি নিতে অস্বীকার করে, যা বিতর্ক তৈরি করে।
বিসিসিআই ইতোমধ্যেই বিষয়টি এএসিসির বার্ষিক সভায় উত্থাপন করেছে এবং নভেম্বরের আইসিসি বৈঠকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানাতে পারে।
এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটেছে যখন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ ভারতীয় পর্যটক নিহত হন, এরপর নয়াদিল্লি ও পাকিস্তান পাল্টা হামলা চালায়। বাইরের হস্তক্ষেপে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। খেলার মাঠে সেই রেশ এশিয়া কাপের শুরু থেকেই দেখা গেছে।