হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে চারপাশ যেমন ডুবে যায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে, বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট এখন ঠিক তেমনই এক নিকষ কালো অন্ধকারে নিমজ্জিত। কবে আলো ফিরবে—তার কোনো আভাস নেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে যে অসহায় পারফরম্যান্স, তাকে বলা চলে ‘নতজানু ক্রিকেট’। এই নিষ্প্রভ পারফরম্যান্সে পুরো দল, অধিনায়ক, নির্বাচক, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে কোচিং স্টাফ—সবাই সমালোচনার তীব্র ঝড়ে জর্জরিত। যেন পুরো ক্রিকেট অফিসটাই একসঙ্গে অযোগ্যতার সনদ পেয়ে বসে আছে!
ব্যাটিং ইউনিট ভেঙে পড়েছে তাসের ঘরের মতো—অপরিণত ও হাস্যকর শটে আউট হচ্ছেন ব্যাটাররা। নেতৃত্বে নেই দৃঢ়তা, ম্যাচ পরিকল্পনায় নেই স্পষ্ট রূপরেখা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে—২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে তো বাংলাদেশ? এই আতঙ্ক এখন ড্রেসিংরুম পেরিয়ে মাঠ, গ্যালারি, এমনকি বিসিবির বারান্দা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
আফগানিস্তানের কাছে ধবলধোলাই কেবল একটি সিরিজ হার নয়—এটা বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের ভঙ্গুর বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সিনিয়রদের বিদায়ে তৈরি হওয়া শূন্যস্থান পূরণে নতুনদের অপ্রস্তুতি, নেতৃত্বের দুর্বলতা ও পরিকল্পনার অভাব দলকে করে তুলেছে দিকহারা।
বিসিবি আশার কথা শোনাচ্ছে—এখনো হাতে ২৩টি ম্যাচ আছে র্যাংকিং উন্নতির জন্য। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এর মধ্যে জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে থাকবে ৮ ম্যাচ, আর বাকি ১৫ ম্যাচে প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। মনে রাখতে হবে, শেষ ১২ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হেরেছে ১১টিতে!
এই ধারা চলতে থাকলে, এখনই কাঠামোগত সংস্কার না আনলে, বিশ্বকাপ বাছাই থেকে শুরু করে বড় টুর্নামেন্টে টিকে থাকাটাই হয়ে উঠবে ‘অসম্ভব মিশন’। তখন যেকোনো বড় আসরে বাংলাদেশের পরিচয় হবে—এরা শুধু অংশগ্রহণকারী একটি দল, এর বেশি কিছু নয়।







