রাজশাহীতে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনার কোনো সুযোগ নেই, তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, বিচার বিভাগকে এই ব্যবস্থায় টেনে আনা হলে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে—যা আমরা অতীতেও দেখেছি।”
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, এটা এখন ঐক্যমত কমিশনের বিষয়, যা চূড়ান্তভাবে গণভোটের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মত দেন তিনি।
তবে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদে প্রয়োজনে রদবদল করে সরকারের নিরপেক্ষতা আরও জোরদার করা যেতে পারে।”
প্রতীক ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, শাপলা প্রতীক না দেওয়া “নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারিতা”, যা ইঙ্গিত করে কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে না। তিনি অভিযোগ করেন, এনসিপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই কমিশন এমন গড়িমসি করছে।
এনসিপি এখনো কোনো জোটে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি জানিয়ে নাহিদ বলেন, “আমরা সংস্কারের পক্ষে যারা আছে তাদের সঙ্গেই কাজ করব। ইতিহাসে দায় আছে এমন শক্তির সঙ্গে জোটে যাওয়ার প্রশ্নে আমাদের ভাবতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে তা শুধু আনুষ্ঠানিক কাগজে সীমিত থাকবে। এটি বাস্তবায়নের রূপরেখা দিতে হবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেই।”
নাহিদ ইসলাম ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যদি কোনো পক্ষ ক্ষমতার লোভে জাতীয় ঐক্য ভাঙতে চায়, তাহলে সংসদ টেকানো কঠিন হবে।”
এছাড়া তিনি নির্বাচনের আগে বিচার প্রক্রিয়ার রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান এবং বলেন, “গুম ও খুনের মামলাগুলোর বিচার অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে জনগণের আস্থা বজায় থাকে।”
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তাদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করা গেলেও ফ্যাসিবাদ এখনো সমাজে টিকে আছে। জাতীয় পার্টিও তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে, যা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।”
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।







