ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসছে ফেব্রুয়ারিতে। নির্বাচনের প্রস্তুতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবার জোট নয়, সমঝোতার পথে হাঁটছে। সমমনা দল ও ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আসনভিত্তিক সমঝোতার মধ্য দিয়ে অংশ নেবে তারা। শরিয়াহ আইন বাস্তবায়ন নিয়ে একমত না হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ জোট গঠন থেকে সরে এসেছে জামায়াত। পাশাপাশি আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা বাড়িয়ে নির্বাচনকে “অংশগ্রহণমূলক” দেখানোর দিকটিও বিবেচনায় রেখেছে দলটি।
বুধবার সিলেটে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন,
“আমরা কোনো জোট করছি না। নির্বাচনি সমঝোতার ভিত্তিতে এগোব। প্রতিটি এলাকায় একটি বাক্স থাকবে—এই নীতিতেই আমরা কাজ করছি।”
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবিসিকে জানান,
“প্রচলিত কাঠামোগত জোট নয়, বরং এমন সমঝোতা হবে যাতে এক আসনে একাধিক প্রার্থী না থাকে।”
সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে জামায়াত ও সাতটি সমমনা দল একযোগে কর্মসূচি পালন করেছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছিল, তারা আনুষ্ঠানিক নির্বাচনি জোট ঘোষণা করবে। তবে শেষ পর্যন্ত জামায়াত সমঝোতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ইসলামপন্থি দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনতে সক্রিয় ছিল জামায়াত। চরমোনাই পীরের সঙ্গে আমিরের সাক্ষাতের পর আলোচনাগুলো গতি পায়। একাধিক বৈঠক ও যৌথ সংবাদ সম্মেলনের পরও শেষ পর্যন্ত ‘জোট’ নয়, ‘সমঝোতা’কেই বেছে নিয়েছে দলটি।
জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন,
“প্রচলিত অর্থে কোনো জোট নয়। সমমনাদের সঙ্গে আসনভিত্তিক সমঝোতা হবে। যেখানে একদল প্রার্থী দেবে, সেখানে অন্যরা দেবে না। ব্যক্তিত্বসম্পন্ন স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রাধান্য দেওয়া হবে।”
সমমনা এক ইসলামী দলের এক সূত্র জানায়, শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে কিছু মতপার্থক্য থাকায় ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। জামায়াত ধাপে ধাপে আইন বাস্তবায়নে আগ্রহী, অন্যরা চায় আরও দ্রুত বাস্তবায়ন।
তাছাড়া, আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা যত বেশি দেখানো যায়, আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাও তত বাড়বে—এটিও জামায়াতের কৌশলের অংশ। বিএনপিও অনুরূপ নীতি অনুসরণ করছে বলে জানা গেছে।
সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও প্রতিটি দলকে নিজস্ব প্রতীকে ভোটে অংশ নিতে হবে। এ কারণেও জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো জোটের পরিবর্তে আসনভিত্তিক সমঝোতার পথেই এগোচ্ছে। সমমনা দলগুলো জোটের পরিবর্তে আসনভিত্তিক সমঝোতার পথেই এগোচ্ছে।







