জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট নিয়ে সরকারের দেওয়া এক সপ্তাহের সময়সীমা আজ শেষ হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় সংকট সমাধানের দায়িত্ব এখন সরকারের হাতে।
জামায়াতে ইসলামী বলছে, তারা বিএনপিকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানালেও কোনো সাড়া মেলেনি। অপরদিকে বিএনপির দাবি— আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিএনপি ও জামায়াতকে আলোচনায় আনতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেটিও ব্যর্থ হয়। ফলে সবাই এখন সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে— কী সিদ্ধান্ত আসে তা দেখার অপেক্ষা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, “রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সিদ্ধান্তে না পৌঁছালে সরকার জনগণের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবে।” তিনি বলেন, “রাজনীতিতে একদিনও অনেক সময়; শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব।”
এ পর্যন্ত ২৫টি রাজনৈতিক দল জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেছে। তবে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ ও দলগুলোর মতভেদের কারণে বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, দুটি বিকল্প নিয়ে ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার—
১️⃣ দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা, অথবা
২️⃣ কোনো আলোচনা ছাড়াই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা।
বিএনপি মনে করে, সনদ বাস্তবায়নে কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে দলগুলোর স্বাক্ষরিত সনদের অমিল রয়েছে। অন্যদিকে জামায়াতের মতে, আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই, নয়তো সমাধান আসবে না।
এনসিপি বলছে, বর্তমান অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরি। তারা আশঙ্কা করছে, এই পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।
বিশ্লেষকদের অভিমত:
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনজুর আহমেদ মনে করেন, “সরকার ও রাজনৈতিক দল— উভয়েরই এখন দায়িত্বশীল আচরণ দেখানো জরুরি।”
অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. একেএম শাহনওয়াজ বলেন, “১৫ মাস পরও সরকার রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি— এটি বড় ব্যর্থতা। এখন যদি সরকার জোড় করে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়, তা হবে আত্মঘাতী।”
বর্তমান চিত্র:
বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এখন প্রকাশ্য বিরোধ দেখা দিয়েছে।
বিএনপি চায় জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট।
জামায়াত চায় নির্বাচনের আগে গণভোট, এবং তাতে কোনো দলের নোট অব ডিসেন্ট থাকবে না।
এই অবস্থায় বিশ্লেষকদের মতে, সংকট নিরসনের বল এখন সরকারের কোর্টেই।







