শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে প্রকাশ্যে নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও গোসাইরহাট উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান উজ্জ্বল চৌধুরীর বিরুদ্ধে। ভেকু ও ডাম্পার ব্যবহার করে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাটি উত্তোলন করে আশপাশের বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করছেন। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ ভাঙনের আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই প্রায় দুই কিলোমিটার নদীপাড়ে ভাঙন বিস্তার লাভ করেছে এবং অন্তত কয়েক একর কৃষিজমি হুমকির মুখে পড়েছে। নদীর দুই পাড়ের কয়েকশো পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, দুটি বাড়ি ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেউয়াতলী এলাকায় জয়ন্তী নদীর পাড়ে দিনের বেলা প্রকাশ্যেই চলছে মাটি কাটার কাজ। ভেকু দিয়ে বড় গর্ত তৈরি করে ডাম্পারযোগে মাটি তোলা হচ্ছে এবং নিকটস্থ তিনটি ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। অভিযোগ করা হলেও প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা নেই বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। মাটি কাটায় নদীর পাড় দুর্বল হয়ে পড়েছে, অনেক এলাকায় জমিতে ফাটল ধরেছে এবং চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে উজ্জ্বল চৌধুরী কৃষক ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মাটি উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন। একাধিক কৃষক জানান, বালু জমে থাকায় ফসল উৎপাদন কমে গেছে এবং নদী ভাঙনের কারণে জমি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। কিন্তু প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উজ্জ্বল চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে নদীর পাড়কে ব্যক্তিগত সম্পদের মতো ব্যবহার করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আশঙ্কা, আগামী বর্ষায় ভয়াবহ ভাঙনে ঘরবাড়ি ও জমি নদীতে হারিয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবদল নেতা মাহফুজুর রহমান উজ্জ্বল চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রৌশন আহমেদ জানান, নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি বা বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। অভিযোগ পাওয়া গেছে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।







