কুমিল্লা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মতিন জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার ও যুব-ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তাঁকে কুমিল্লার দায়িত্ব নিতে ‘জোর করেই’ রাজি করিয়েছেন।
মঙ্গলবার কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। তিন মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজ আমার দেশ প্রতিনিধির হাতে এসেছে।
সভায় নিজের বক্তব্যে প্রকৌশলী মতিন বলেন, “২০ বছর জেলার বাইরে কাজ করেছি। এবার কুমিল্লায় দায়িত্ব পেলাম। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া একপ্রকার জোর করেই আমাকে কুমিল্লার দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই আমি সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।”
তিনি আরও বলেন, কুমিল্লায় এলজিইডির নিবন্ধিত ঠিকাদার সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার, কিন্তু কাজের গতি অত্যন্ত শ্লথ। অনেক প্রকল্প বন্ধ পড়ে আছে, আর কিছু কাজ নিম্নমানের। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনিয়ম যাচাই শুরু করেন এবং নিন্মমানের কাজে জরিমানা আরোপের উদ্যোগ নেন।
তিতাসে একটি ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদার মিলে ঢালাই করে ফেলেছিল, অথচ আমাকে জানানো হয়নি। ঠিকাদাররা শক্তিশালী; তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রিজটি ভাঙতে সক্ষম হয়েছি—এটাই আমার সার্থকতা।”
তিনি জানান, মুরাদনগরেও উপদেষ্টার এক আত্মীয় ঠিকাদার অনিয়ম করে অনুমতি ছাড়াই ঢালাই করে ফেলেছিলেন। এলজিইডির কাজে এ ধরনের অনিয়ম বারবার ঘটছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মু. রেজা হাসান, কুমিল্লা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান, সচেতন নাগরিক কমিটির অধ্যাপক নিখিল চন্দ্র রায়সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা তাঁকে জোর করে দায়িত্ব দেন—এ বক্তব্য বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মতিন ফোন ধরেননি।
এদিকে, গত ২ ডিসেম্বর কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে স্থানীয় ঠিকাদার ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করে আবদুল মতিনের অপসারণ দাবি করেন। তাদের অভিযোগ, অতিরিক্ত ঘুষ ছাড়া প্রকল্পের বিল ছাড় করেন না তিনি। এতে চলমান রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে।







