চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে লক্ষাধিক মেট্রিক টন আম দেশে ও দেশের বাইরে রপ্তানি করার ক্ষেত্রে প্যাকেট করার উপকরণ হলো ক্যারেট। আর আম রপ্তানি করতে আম ব্যবসায়ীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে ক্যারেট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে। আম রপ্তানি করতে হাজার হাজার ক্যারেট কিনতে হয় ব্যবসায়ীদের। আম ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে হু হু করে ক্যারেটের দাম বাড়ছে। একটি ক্যারেটের দাম ধরা হয়েছে ২১০ টাকা।
আম ব্যবসায়ী আবদুল খালেক বলেন, যে হারে ক্যারেটের দাম বাড়ছে, তাতে আমের ব্যবসা করে লাভ তো দূরের কথা লোকসান গুনতে হবে। তিনি আরো বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে একটি ক্যারেটের দাম ছিল ১৬৫ টাকা হতে ১৭০ টাকা। বর্তমানে সেটি বৃদ্ধি পেয়ে দাম দাঁড়িয়েছে ২১০ টাকা। ক্যারেটের দাম আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ ক্যারেট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গুদামে ক্যারেট থাকলেও ন্যায্য দামে ক্যারেট না দিয়ে কৌশলে দাম বাড়িয়ে হয়রানি করছে।
আম ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সামান্য লাভের আশায় আমের ব্যবসা করি। কিন্তু এ বছরে যে হারে ক্যারেটের দাম বাড়ছে, তাতে আমরা হতাশ। তিনি আরো বলেন, প্রতিবছর মৌসুম শেষে ক্যারেট ব্যবসায়ীরা ১১৫-১২০ টাকা দরে হাজার হাজার ক্যারেট ক্রয় করে গুদামজাত করে। মৌসুমে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করে। কিন্তু এবার অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়েছে। তারা বর্ধিত রেটে ক্যারেট ক্রয় করতে বাধ্য করছে। কারণ সিন্ডিকেটের বাইরে শিবগঞ্জে কেউ ক্যারেট বিক্রি করে না।
আম ব্যবসায়ী রুবেল হক বলেন, গত মৌসুমে ক্যারেট ১৪০-১৫০ টাকা দরে কিনেছি। এ মৌসুমে ২১০ টাকা দরে ক্যারেট কিনতে হচ্ছে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন আম বাজারে ঘুরে একই চিত্র পাওয়া গেছে। তবে ক্যারেট ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কানসাট বাজারের ক্যারেট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলি বলেন, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্যারেট ক্রয় করে নিয়ে আসি। পাঁচ থেকে দশ টাকা লাভে বিক্রি করি। বর্তমানে বড় বড় মোকাম থেকে ২০২-২০৩ দরে ক্যারেট ক্রয় করে ২১০ দরে বিক্রি করছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের একটি সমিতি আছে। কিন্তু কমিটির কোনো কার্যকারিতা নেই। আমরা কোনো আম ব্যবসায়ীকে হয়রানি করি না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজাহার আলী বলেন, ক্যারেট ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কথা আমার জানা ছিল না। শিগগির ক্যারেট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে আম ব্যবসায়ী ও চাষিদের হয়রানি বন্ধ করা হবে।