বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, কারাগারে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু এখনো রহস্যে ঘেরা। তিনি এই রহস্য উদঘাটনে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাজধানীর উত্তরার একটি অডিটরিয়ামে উত্তরা পশ্চিম থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ষান্মাসিক রুকন সম্মেলন ও আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।
তিনি বলেন, আওয়ামী-বাকশাল সরকার কথিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে জামায়াতকে ধ্বংস ও জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আল্লামা সাঈদীকে প্রথমেই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। তবে আল্লাহর ফয়সালা ছিল ভিন্ন—স্কাইপ কেলেঙ্কারি সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে দেয় এবং সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর অপহরণের ঘটনা সরকারের স্বৈরাচারী নীলনকশা জাতির সামনে উন্মোচন করে। তারপরও সাঈদীকে ১৫ বছর কারাভোগ করতে হয়।
ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে জামায়াতের ওপর দমন-নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরে মাওলানা হালিম বলেন, গত ১৮ বছরে ১১ জন শীর্ষ নেতা শহীদ হয়েছেন, যার মধ্যে একজন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমিরও আছেন। মোট শহীদের সংখ্যা ৫০০-এর বেশি, গুরুতর আহত ৫ হাজার, এদের মধ্যে অনেকে পঙ্গুত্ববরণ বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। দুই হাজার নারীসহ লক্ষাধিক মানুষ কারাভোগ করেছেন। তবুও জামায়াতের অগ্রযাত্রা থামানো যায়নি। তিনি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করতে রুকনদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন থানা আমির মাজহারুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি ফিরোজ আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন জোনের সহকারী পরিচালক মাহবুব আলম মুকুল, ঢাকা-১৮ আসনের প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী আরব আলী, থানা অফিস সম্পাদক জিএম আসলাম, বাইতুলমাল সম্পাদক মশিউর রহমান, কর্মপরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম, মাহমুদুর রহমান, জাহাঙ্গীর শিকদার, ওয়ার্ড সভাপতি হাফেজ ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।
আলোচনা শেষে শহীদ আল্লামা সাঈদী, শহীদ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও জুলাই শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। জুলাই ঘোষণায় জনগণের প্রত্যাশা পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও গণহত্যার বিচারও এখনো দৃশ্যমান নয়। তিনি এসব অনিশ্চয়তা দূর করে অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান।