প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের টেকসই আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য দক্ষ ও কর্মক্ষম জনশক্তি গড়ে তোলা অপরিহার্য। দক্ষ জনশক্তি ছাড়া কোনো দেশ, জাতি বা সমাজ এগিয়ে যেতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে বহু পরিবার দরিদ্র হয়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
বুধবার অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. নুরজাহান বেগম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ৩৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব স্বাক্ষরিত অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে যৌথ ঘোষণাপত্র প্রধান উপদেষ্টার হাতে হস্তান্তর করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ মানুষ অসংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণ করছে এবং প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ নিজেদের পকেটের টাকায় চিকিৎসা নিচ্ছে, যা দারিদ্র্য বাড়াচ্ছে। তিনি স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা স্বাস্থ্যবান্ধব কর্মসূচি ও নীতি গ্রহণ করবো। এর জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত বছর ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের স্বাস্থ্য খাত উন্নয়নে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছে।
সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. নুরজাহান বেগম বলেন, হার্টের রোগ, ক্যান্সার, লিভার ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। নিরাপদ সমাজ ও পরিবেশ নিশ্চিত করা সব মন্ত্রণালয়ের যৌথ দায়িত্ব। তিনি বলেন, “সমন্বিত নীতি ছাড়া এ মহামারি মোকাবিলা সম্ভব নয়। সরকার একা তা করতে পারবে না, এজন্য নাগরিক সমাজ ও প্রতিটি পরিবারকে দায়িত্ব নিতে হবে।”