রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের সাহেরা ট্রপিক্যাল সেন্টারের ব্যবসায়ী সমিতির পদ পাওয়ার জন্য একসময় বঙ্গবন্ধুর সৈনিক পরিচয় নেন এস এম মতিউর রহমান। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি নিজেকে বিএনপির ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। রাজনৈতিক পালাবদলের সেই রাতেই তিনি দখল নেন সমিতির সভাপতির পদ। অভিযোগ উঠেছে, এরপর থেকেই তিনি নিউ মার্কেট থানার প্রস্তাবিত বিএনপি কমিটির সভাপতি দাবি করে চাঁদাবাজির জন্য নিজস্ব বলয় গড়ে তোলেন।
ব্যবসায়ীরা লিখিত অভিযোগে জানান, ৫ আগস্টের পর সমিতির সভাপতি পালিয়ে গেলে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মতিউর রহমান নিজেকে স্বঘোষিত সভাপতি ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই তিনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় শুরু করেন। তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই দোকানে তালা মারা, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ নানা হয়রানির শিকার হতে হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তার অত্যাচারে ন্যায্য বিচার দাবিতে ব্যবসায়ীরা এলাকায় পোস্টারও টাঙিয়েছেন। অতীতে তিনি আওয়ামী লীগের দোসরদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন—এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, আগে যেখানে স্কয়ারপ্রতি সার্ভিস চার্জ ছিল ১০–১২ টাকা, এখন তার প্রভাবে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকায়। আগে তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটাতেন, এখন বিএনপির নাম ব্যবহার করছেন।
নিউ মার্কেট থানা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২১ সালে ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে মুচলেকা দেন এবং বিএনপিকে ছেড়ে যান। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর আবার নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করছেন।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে মতিউর রহমান বলেন, “আমি কোনো মুচলেকা দিইনি। ২০২১ সালে আমি জেলে ছিলাম, এর আগেও কয়েকবার জেলে গিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে একটি মহল মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি কখনো চাঁদাবাজি করিনি।”
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন জানান, “তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এসেছে। তাকে শোকজ করা হয়েছে এবং তিনি জবাবও দিয়েছেন। যাচাই-বাছাই শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতীতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”