ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কোনো সংগঠনকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া বা ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া প্রক্রিয়ায় নির্বাচন পরিচালনা শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট-এর ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম। তার মতে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন কিংবা হল প্রশাসন যদি কোনো নির্দিষ্ট দলকে ফেভার করে, তবে সেটি শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার সমান।
মঙ্গলবার রাতে আমার দেশ আয়োজিত ‘ডাকসু নির্বাচনি ভাবনা’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সাদিক কায়েম বলেন, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি ছিল ডাকসু নির্বাচন। বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা প্রথমেই ডাকসু এবং পরবর্তীতে সব ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানায়। আজ থেকে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হয়েছে, আর এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শুরু থেকেই আমরা জোর দিয়ে আসছি—লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা সম্মানিত হলেও প্রশাসন যে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নয়, তা স্পষ্ট। কোনো দলকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হলে ন্যায্য নির্বাচন সম্ভব হবে না।
অভিযোগ তুলে ধরে তিনি জানান, চারুকলা এলাকায় তাদের ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং ছবি বিকৃত করা হয়েছে। বিশেষ করে নারী প্রার্থীদের ছবি বিকৃত করা হয়েছে, যা নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ব্যাহত করার অপচেষ্টা। তার দাবি, এটি জুলাই বিপ্লবের পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্রের অংশ।
কালচারাল ফ্যাসিস্টদের চিহ্নিত করে প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন করতে হলে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। যারা পুরনো ফ্যাসিবাদী বক্তব্যে টিকে থাকতে চায়, তাদের প্রতিহত করতে হবে। সাইবার বুলিং বা নারী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা রুখে দিতে সব ছাত্রসংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আচরণবিধি প্রণয়নে নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, রাত আট-নয়টার দিকে হঠাৎ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে, অথচ প্রার্থীদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হচ্ছে না। এসব আচরণবিধি মূলত একটি সংগঠনকেই সুবিধা দিচ্ছে।
তিনি জানান, তারা লিখিতভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছেন এবং বিশ্বাসযোগ্য ও স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রস্তাবনা দিয়েছেন। তার আশা, ডাকসুর দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে একটি ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা গণতন্ত্রের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এবং দেশের পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—‘বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’-এর ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের, প্রতিরোধ পর্ষদ-এর ভিপি প্রার্থী তাসনীম আফরোজ ইমি, ‘ডাকসু ফর চেইঞ্জ’-এর ভিপি প্রার্থী বীন ইয়ামিন মোল্লা, ভিপি প্রার্থী জামাল উদ্দিন খালেদ ও ইয়াসিন আরাফাত।