বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের ঘোষণা ছিল প্রধান উপদেষ্টার। অথচ প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান রূপ না দিয়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি যেই রোডম্যাপ দিয়েছেন, সেই রোডম্যাপেই নির্বাচন হতে পারে। এতে জামায়াতের কোন আপত্তি নাই। তবে অবশ্যই নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে তার বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই আলোকে গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। তারপর পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সংসদ ও সরকার গঠন করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে জনগণ দাবি আদায়ে রাজপথে নেমে আসবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে কিভাবে দাবি আদায় করতে হয়। সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান হবার আগে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না৷ পরিকল্পিত নির্বাচন হলে সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পৌঁছাতে দেবে না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলরুমে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত “জুলাই ঘোষণা, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ও বাস্তবায়ন এবং পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে”- আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়। একটি মাত্র দল ব্যতীত অন্য সব দলও পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনভাবেই দেশের ৭১ শতাংশ জনগনকে এবং ছোট-বড় সব রাজনৈতিক দলকে উপেক্ষা করে একটি মাত্র দলের জন্য পিআর পদ্ধতি এড়িয়ে যেতে পারে না, পারবে না।
তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের আকাঙ্খা অনুযায়ী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যাশায় জাতি পুরাতনকে বিতাড়িত করেছে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে নতুন-নতুন ইস্যু আসবেই। যারা নতুন নতুন ইস্যুতে অস্বস্তিবোধ করে, তারা মূলত নতুন বাংলাদেশ চায় না। তারা আওয়ামী জাহেলিয়া নতুনরূপে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জামায়াতে ইসলামীর দাবি গণমানুষের দাবি। যার ফলে দেশের ছোট-বড় প্রায় সব দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবানের দাবি জানিয়ে আসছে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলেরসহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেনের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা-১৩ আসনের প্রার্থী মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণের নায়েবে আমির, ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৫ আসনের প্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী কবির আহমেদ, দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা-৪ আসনের প্রার্থী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের উপর যেই দায়িত্ব দিতে চায়, এটি হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এটি হবে জুলাই যোদ্ধাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল।