সম্প্রতি এক টকশোতে জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী ব্যারিস্টার শিশির মনিরকে ডা. জাহেদ প্রশ্ন করেছিলেন, “জামায়াতে ইসলামীতে কোনো অমুসলিম কি আমির হতে পারবেন?”—এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে পিনাকী ভট্টাচার্য নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে ডা. জাহেদকে উদ্দেশ করে কয়েকটি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন।
তার পোস্টে তিনি লেখেন—
ডা. জাহেদ একটু স্পষ্ট করে বলুন, বিএনপিতে জিয়া পরিবারের বাইরে কি কেউ কখনো চেয়ারপারসন হতে পেরেছেন? কিংবা একজন আলেম কি সিপিবির সভাপতি হতে পারেন? সে তুলনায় জামায়াত তো অনেক বেশি ইনক্লুসিভ। ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে গড়া একটি দলের আমির যদি হিন্দু হতে হয়—এটা তো মুসলিম ও হিন্দু, দুই সম্প্রদায়ের কাছেই অসম্মানজনক। একটি ইসলামী দলের নেতৃত্বে হিন্দু আসার দাবি আসলে অযৌক্তিক।
তিনি আরও লিখেছেন, বিএনপি কিংবা সিপিবি মতাদর্শগতভাবে জাতীয়তাবাদী বা বামপন্থী, যেখানে তাত্ত্বিকভাবে যেকোনো যোগ্য ব্যক্তি নেতৃত্বে আসতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে পরিবারতন্ত্র ও সংগঠনের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা সেই সুযোগ দেয় না। অন্যদিকে জামায়াত আদর্শগতভাবে ইসলামী দল, সেখানে অমুসলিমকে আমির করা পার্টির সনদের পরিপন্থী। তাই একে ইনক্লুসিভনেসের মানদণ্ডে মাপা ভুল।
পিনাকীর মতে, প্রকৃত ইনক্লুসিভনেস মানে হলো—দলের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে কতটা ভিন্নমত ও বহুত্ববাদ স্থান পাচ্ছে। বিএনপি কিংবা সিপিবির ক্ষেত্রে নেতৃত্ব বরাবরই পরিবার বা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে সীমাবদ্ধ থেকেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, খালেদা জিয়া কারাগারে থাকাকালে নেতৃত্ব আবারো তারেক রহমানের হাতেই ছিল।
তার প্রশ্ন হলো—যদি জামায়াতকে ‘এক্সক্লুসিভ’ বলা হয় কেবল অমুসলিম আমির না থাকার কারণে, তবে বিএনপির প্রতিও প্রশ্ন ওঠে: কেন এই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে কোনো হিন্দু বা বৌদ্ধকে এখনো প্রেসিডেন্ট বা দলের চেয়ারপারসন করা হয়নি? ইসলামী দলের আমির মুসলিম হওয়াটা মতাদর্শগতভাবে স্বাভাবিক, কিন্তু তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী বা বাম দলের নেতৃত্ব কেন পরিবারতন্ত্রের বাইরে যেতে পারে না—সেটাই মূল প্রশ্ন।