কক্সবাজার শহরে আলোচিত-সমালোচিত এক নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেত্রীকে রক্ষার আশ্বাস দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন বিএনপি নেতা নুর উদ্দিন। পবিত্র কোরআন শরীফ মাথায় রেখে সকল মামলা ও সামাজিক সমস্যায় সহযোগিতা করার শপথ করে নগদ টাকা গ্রহণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
অভিযুক্ত নুর উদ্দিন শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। গোপনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, সমিতি পাড়ার আওয়ামী লীগ নেত্রী রোজিনা আক্তারের ঘরে তিনি কোরআন মাথায় নিয়ে শপথ করছেন এবং পরবর্তীতে রোজিনার হাত থেকে নগদ দুই লাখ টাকা গ্রহণ করছেন।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে এটিকে ধর্মীয় অবমাননা হিসেবে দেখছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, “এবার বুঝি কোরআন দিয়ে টাকা তোলার নতুন ব্যবসা শুরু হলো।” আরেকজন লিখেছেন, “যে মানুষ কোরআনকে হাতিয়ার বানায়, সে সমাজের নেতা হওয়ার যোগ্য নয়।”
ভুক্তভোগী রোজিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, নুর উদ্দিন প্রথমে দুই লাখ টাকা নিলেও পরবর্তীতে আরও অর্থ দাবি করেন। টাকা না দিলে হত্যার হুমকি ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান তিনি। বর্তমানে তিনি ভয়ে আছেন বলেও জানান।
এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নুর উদ্দিনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই মানব পাচার, পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের অভিযোগ থাকলেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তিনি বারবার রক্ষা পেয়ে গেছেন।
ঘটনাটি নিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নুর উদ্দিন দাবি করেন, এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তবে কোরআন মাথায় তুলে টাকা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান বলেন, “ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। কেউ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। তারপরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
এ বিষয়ে কক্সবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, “ঘটনাটি জানার পর আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রথমে তাকে শোকজ করা হবে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”