বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুহাম্মাদ শাহজাহান বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ ছাত্রসমাজ প্রমাণ করেছে—দেশ ফ্যাসিবাদের যুগ পেরিয়ে গণতন্ত্রের পথে এগোচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন অর্জন করবে। তাঁর দাবি, জামায়াত সরকারি দল হবে আর বিএনপিকে নিতে হবে বিরোধী দলের আসন।
শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরে আয়োজিত এক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জুলাই সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশ আয়োজন করে নগর জামায়াত।
আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—সংবিধানের সংস্কার করবেন, গণহত্যার বিচার করবেন, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনবেন, রাজনৈতিক লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করবেন এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি মহলের চাপে বা ষড়যন্ত্রে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এই তিনটি দল দেশ শাসন করেছে। একটি দল ফ্যাসিবাদী চরিত্রের, আরেকটি অতিরিক্ত দালালি করতে গিয়ে বিলুপ্ত হয়েছে, আরেকটি দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছে। তাঁর অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের সম্পদ লুটের ষড়যন্ত্রে নেমেছে এই মহল।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার আশপাশে ষড়যন্ত্রকারী রয়েছে। অনেকে বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস একটি দলের প্রভাবে আছেন। আমরা তা বিশ্বাস করি না। তবে তাঁর চারপাশের লোকজন দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
সভাপতির বক্তব্যে নগরের ভারপ্রাপ্ত আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, অতীতে বহুবার প্রভিশনাল অর্ডার দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে আইনি ভিত্তি দেওয়া হয়েছে। তাহলে জুলাই সনদকে কেন আইনি ভিত্তি দেওয়া হচ্ছে না? দ্রুত প্রভিশনাল অর্ডার জারি করে জুলাই আন্দোলনকে আইনগত স্বীকৃতি দিতে হবে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন নগর সেক্রেটারি মুহাম্মদ নুরুল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান হেলালী, চট্টগ্রাম–১১ আসনের প্রার্থী শফিউল আলম ও চট্টগ্রাম–৮ আসনের প্রার্থী আবু নাছের প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নেতা-কর্মীরা।
এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন আল ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াত। এর অংশ হিসেবে আজ চট্টগ্রামসহ দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।