বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ বহু বছর ধরে পাচার চক্রের কবলে। কৌশলটা চমকে দেওয়ার মতো—বাংলাদেশ থেকে বেশি দামে ইলিশ কিনে কম দামে ভারতে রপ্তানি করা হয়। এরপর ভারতকে ট্রানজিট বানিয়ে গোপনে তৃতীয় দেশে পাচার করে কয়েকগুণ লাভ করছে আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট।
সরকারি হিসাবে, রপ্তানি মূল্যে প্রতি কেজি ইলিশ ধরা হয় ১ হাজার ৫২৫ টাকা। কিন্তু খরচ দাঁড়ায় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মতো। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে—এতো খরচ করে ভারতকে ইলিশ পাঠানো হচ্ছে কেন? অনুসন্ধানে বেরিয়েছে, কলকাতাসহ ভারতীয় বাজারে এই ইলিশের খুব সামান্য অংশই বিক্রি হয়, বাকি অংশ পাচার হয় অন্যান্য দেশে।
২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ। তবে প্রতিবছর দুর্গাপূজায় প্রতীকী উপহার হিসেবে সীমিত পরিমাণ ইলিশ পাঠানো হয় ভারতে। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে সিন্ডিকেট। ইলিশ রপ্তানির নামে ভারতে পাঠানো মাছের বড় অংশ পাচারের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে উচ্চমূল্যের আন্তর্জাতিক বাজারে।
ফলে একদিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশ বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা থেকে, অন্যদিকে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে বহুমুখী অবৈধ বাণিজ্য চক্র। দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে এই ‘ট্রানজিট কূটনীতি’, তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে পাচার রোধে দৃশ্যমান সাফল্য আসেনি।