আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ছাত্র-জনতাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সমালোচিত এই মন্ত্রিসভার সদস্য, বর্তমানে পলাতক নওফেল সম্প্রতি এক ইউটিউব সাক্ষাৎকারে বলেন, “বাঙালি অনেক কঠিন। কিছু দিনের জন্য বসে আছে, কারো পিঠের চামড়া থাকবে না। শেখ হাসিনা জনগণকে ভালোবাসেন বলে আওয়ামী লীগ ধৈর্য ধরে অহিংস আন্দোলন করছে। তবে নেতাকর্মীরা দেশের স্বার্থে ও গৃহযুদ্ধ এড়াতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
ভারতের প্রভাবকে ঢাল বানিয়ে ছাত্রদের রক্ত ঝরানোর হুমকি দিয়ে তিনি আরও দাবি করেন, “আমাদের আঞ্চলিক শক্তি আছে। বিএনপি-জামায়াত বা জুলাই গোষ্ঠীর পাশে কেউ নেই। পালাতে হলে তাদের আমাদের দ্বারস্থ হতে হবে। তারা কোথাও পালাতে পারবে না। আমাদের নেতাকর্মীরা গৃহযুদ্ধ ঠেকাতেই প্রস্তুত।”
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি বাঁচানোর স্বার্থে নীরব আছে, কিন্তু পরিস্থিতি বদলালে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না। তার ভাষায়, “আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরাই ৯ মাসে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নওফেলের এ বক্তব্য জনমনে ভয় সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার কৌশল।
এটি প্রথমবার নয়। শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে তিনি চট্টগ্রামে এক সভায় ভাস্কর্যবিরোধীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, “সম্প্রীতি নষ্ট করলে ঘাড় মটকে দেবো।” রাজধানীর ধূপখোলা মাঠে ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশেও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “মঞ্চ বেশি কাঁপাবেন না, নইলে পায়ের নিচের মাটিও নরম হয়ে যাবে।” এছাড়াও একাধিকবার তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ যেমন ঘাড়ে হাত রেখে বন্ধুত্ব করতে জানে, তেমনি প্রয়োজনে ঘাড় মটকাতেও জানে।
ইসলামবিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত নওফেল বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আরাম-আয়েশে জীবনযাপন করছেন। তার বাবা প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও সাবেক মেয়র। স্থানীয় সূত্রের দাবি, নওফেলের নির্দেশেই গত জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি। তাদের গুলিতে তখন ছয়জন ছাত্র-জনতা নিহত হন।