জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী নেতাদের গোপন আস্তানা উন্মোচিত হয়েছে। জানা গেছে, তাদের মূল ঘাঁটি গড়ে উঠেছে কলকাতায়।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা আইবি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া ৭৩৪ জন আওয়ামী নেতার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে একটি ডেটাবেস তৈরি করেছে। সেখানে তাদের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, ঠিকানা এবং ব্যবহৃত ফোন নম্বরও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ডেটাবেসটি আমাদের হাতে এসেছে।
আমার দেশ-এর অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনার ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পালানোর পরপরই তার ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, শীর্ষ আমলা, পুলিশ কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনার এবং প্রভাবশালী নেতারা পরিবার-পরিজনসহ ভারতে আশ্রয় নেন। কারও কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত কর্মচারী এবং গৃহকর্মীরাও গিয়েছেন।
প্রথমদিকে তারা কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় অবাধে চলাফেরা করলেও এখন কঠোর নজরদারির কারণে সীমিত আকারে অবস্থান করছেন। গোয়েন্দা সংস্থার কড়া পর্যবেক্ষণে থাকা এসব নেতার আর্থিক ব্যয় নিয়মিত বাংলাদেশ থেকেই পাঠানো হচ্ছে, যার সিংহভাগই হুন্ডির মাধ্যমে আসে।
পলাতক শেখ হাসিনা বর্তমানে দিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো জোনের সুরক্ষিত একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন। আর তার দলের বেশিরভাগ নেতা পরিবার-পরিজন নিয়ে কলকাতায় গড়ে তুলেছেন আস্তানা। তাদের মধ্যে আছেন ওবায়দুল কাদের, শেখ সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আসাদুজ্জামান খান কামাল, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মাহবুব-উল আলম হানিফ, নসরুল হামিদ বিপু, জাহিদ মালেক, তাজুল ইসলাম, নূর-ই আলম চৌধুরী, শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ তন্ময়সহ আরও বহু প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতা।
এছাড়া সাবেক মেয়র, হুইপ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা, আমলা, সামরিক কর্মকর্তা এমনকি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সাংস্কৃতিক কর্মীও সেখানে অবস্থান করছেন।
সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্র জানায়, কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেকেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারির মধ্যে রয়েছেন এবং ডেটাবেসে প্রতিনিয়ত নতুন নাম যোগ হচ্ছে।