মাদাগাস্কারের অন্তর্বর্তীকালীন সামরিক প্রশাসন সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রজোয়েলিনার নাগরিকত্ব বাতিল করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রজোয়েলিনা ২০১৪ সালে ফরাসি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছিলেন, যা মাদাগাস্কারের ১৯৬০ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী বেআইনি। ওই আইনে বলা হয়েছে, কোনো নাগরিক অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাদাগাস্কারের নাগরিকত্ব হারাবেন।
দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট রজোয়েলিনার বিরুদ্ধে চলমান তদন্তের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফরাসি নাগরিকত্ব গোপন রেখে তিনি ২০১৮ ও ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে তার প্রার্থিতা অবৈধ ছিল বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
অ্যান্ড্রি রজোয়েলিনা প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন ২০০৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, যখন তিনি মাত্র ৩৪ বছর বয়সী ছিলেন। পরে ২০১৯ সালে নির্বাচিত হয়ে পুনরায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংকট, দুর্নীতি, এবং তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বাধীন ‘জেন-জি’ আন্দোলনের মুখে তার জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে কমে যায়।
গত ১৫ অক্টোবর ব্যাপক বিক্ষোভ ও সেনা বিদ্রোহের মুখে রজোয়েলিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মাত্র দশ দিনের মাথায় তার নাগরিকত্ব বাতিলের ঘোষণা আসে, যা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
আইনি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে রজোয়েলিনা ভবিষ্যতে আর কোনো জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। অনেকের মতে, এটি মাদাগাস্কারের রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা, যেখানে ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব’ ইস্যুটি ভবিষ্যতের রাজনীতিকদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।







