অনুসন্ধানী ডেস্ক
খুলনাতে যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না হোটেল ক্যাসল সালামের ম্যানেজার খালেদকে পিটিয়েছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি খুলনাতে তারুণ্যের সমাবেশ উপলক্ষে যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না হোটেল ক্যাসল সালামে অবস্থান করছিলেন। এই সময় হোটেলের সার্ভিস সংক্রান্ত বিষয়ে সন্তুষ্ট না হয়ে যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না হোটেল ম্যানেজার খালেদসহ অন্যান্য কর্মচারীদের পিটিয়ে আহত করেছেন।
ম্যানেজার খালেদকে পিটিয়ে আহত করার সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সফর সঙ্গী ওমর ফারুক, এপিএস ফুয়াদ এবং খুলনা জেলা যুবদলের সভাপতি রুবায়েত। তারাও খালেদকে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজাদির ডাকের অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনাতে তারুণ্যের সমাবেশ উপলক্ষে যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না খুলনায় আসেন ও হোটেল ক্যাসল সালামের আথিতেয়তা গ্রহণ করেন। মোনায়েম মুন্না ৫০১ নং রুমে অবস্থান করছিলেন। ৫০১ নং রুমের টয়লেটের ফ্লাশ কাজ করছিল না। উনি কমপ্লেইন করলে হোটেল কর্তৃপক্ষ একজন টেকনিশিয়ানকে সেখানে পাঠায়।
টেকনিশিয়ান যখন ৫০১ নং রুমে আসে তখন যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না তিনি বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী নিয়ে মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন এবং টেকনিশিয়ানকে বললেন “এখন মিটিং চলছে, পরে আসেন”।
শুক্রবার ১৬ তারিখ তিনি জুম্মার নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে হোটেল কর্তৃপক্ষকে টয়লেটের ফ্লাশ ঠিক করতে বলেন। নামাজ শেষ করে উনি রুমে এসে দেখেন তার টয়লেটের ফ্লাশটি এখনো ঠিক হয়নি, তখনই তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন এবং হোটেল ম্যানেজার জনাব খালেদকে রুমে আসতে বলেন।
খালেদ সাহেব যখন রুমে আসেন তখন মুন্না সাহেবের রুমে আরো তিনজন অবস্থান করছিলেন। ওমর ফারুক, যিনি মুন্নার সফর সঙ্গী, মুন্নার এপিএস ফুয়াদ এবং খুলনা জেলা যুবদলের সভাপতি রুবায়েত।
খালেদ সাহেবকে উনি টয়লেটের ফ্লাশ ঠিক করার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে জবাবে খালেদ সাহেব বলেন “স্যার, আজকে জুম্মার দিন, আমাদের টেকনিশিয়ানরাও নামাজ পড়তে গেছে তাই ঠিক করা হয়নি, কিন্তু এখন টেকনিশিয়ানরা এসে গিয়েছে, তারা এসে ঠিক করে দিচ্ছে”।
মোনায়েম মুন্না স্বভাবগত বদমেজাজি হবার কারণে তিনি খালেদ সাহেবের মুখে ঘুষি মেরে বসেন যাতে তার চোখের চশমা ভেঙে যায়। উনি ঘুষি মারার সাথে সাথে রুমে অবস্থিত অন্য তিনজনও খালেদকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় খালেদ সাহেব রুম থেকে বের হয়ে গেলে মোনায়েম মুন্না হাউসকিপার হাফিজকে ডাকেন। হাফিজ তার সাথে একজন টেকনিশিয়ান নাম কামরুল এবং হোটেলের রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার জনাব আখতার কে নিয়ে তার রুমে আসেন।
তাদেরকেও তিনি একইভাবে জেরা করতে থাকেন এবং একপর্যায়ে রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার জনাব আক্তারের কানে আঘাত করেন যার ফলে তার কান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। রুমে অবস্থানরত বাকি তিনজন হাউসকিপার হাফিজ এবং টেকনিশিয়ান কামরুল কে মারধর করেন। এ ঘটনার পর হাউসকিপার হাফিজ এবং রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার আখতার কে দ্রুত সিটি মেডিকেলে নেয়া হয়।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোনায়েম মুন্না খুলনা যুবদলের সভাপতি রুবায়েতের মাধ্যমে স্থানীয় যুবদলের কর্মীদের দিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে হুমকি দেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ দিতে অস্বীকৃতি প্রদান করে। হোটেলের অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিলে কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না দ্রুত হোটেল ত্যাগ করে খুলনার অন্য একটি ‘হোটেল সিটি ইন’-এ অবস্থান করেন।
এই বিষয়ে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে হোটেল ক্যাসল সালামের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন, মামলা না করার ব্যাপারে বিএনপি নেতারা ক্রমাগত তাদের হুমকি দিচ্ছেন। তাই হোটেল কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছেন।