বিভিন্ন বুবি-ট্র্যাপ প্রযুক্তি ও গুপ্তচর কৌশল ব্যবহার করে বিশ্বজুড়ে নাশকতা ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে ইসরাইল—এমন দাবি করেছেন মোসাদের সাবেক পরিচালক ইয়োসি কোহেন। দ্য জিউইশ ক্রনিকলের সম্পাদক জ্যাক ওয়ালিস সাইমনসের সঙ্গে এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিষয়টি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।
পডকাস্টে কোহেন জানান, ২০০২ থেকে ২০০৪ সালে মোসাদের স্পেশাল অপারেশনস ডিভিশনে দায়িত্ব পালন করার সময় তিনি ‘পেজার পদ্ধতি’ উদ্ভাবন করেন। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথমে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ব্যবহৃত যোগাযোগ ডিভাইসগুলো অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পেজারগুলো দূরনিয়ন্ত্রিত নজরদারি যন্ত্র বা বিস্ফোরক ডিভাইসে রূপান্তরিত করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আপনি ধারণাও করতে পারবেন না, কত দেশে আমাদের বিশেষভাবে পরিবর্তিত সরঞ্জাম রয়েছে। এগুলো শুধু বুবি-ট্র্যাপড নয়, এমনভাবে তৈরি যেগুলো তথ্য সংগ্রহ, নজরদারি এবং প্রয়োজনে সরাসরি ক্ষতিসাধনেও সক্ষম।”
কোহেন জানান, প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রের কোনো সরঞ্জাম প্রয়োজন হলে ইসরাইল চেষ্টা করে তাদের সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রবেশ করতে এবং ধীরে ধীরে সেই প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিতে। ২০০৬ সালে দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধের সময় এই পদ্ধতি পরীক্ষা করা হয় এবং পরবর্তীতে বিশ্বজুড়ে সম্প্রসারিত ও উন্নত করা হয়।
এর আগে গত মাসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু উল্লেখ করেছিলেন, পৃথিবীর যেকোনো মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ‘ইসরাইলের অংশ’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোহেনের বক্তব্য দীর্ঘদিনের সন্দেহকে আরও পোক্ত করেছে। তাদের মতে, ইসরাইল প্রযুক্তিকে “ট্রোজান হর্স” হিসেবে ব্যবহার করছে, যা বৈশ্বিক গোয়েন্দা কর্মকাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সাক্ষাৎকারটি আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতা, বৈধতা এবং প্রযুক্তি নির্ভর গুপ্তচরবৃত্তির সীমা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।







