চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত কর্নফুলি টানেল চালুর দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নদী তলদেশীয় এই টানেলটি উদ্বোধন করা হয় ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর।
সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, টানেল চালুর পর থেকে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত টানেল দিয়ে মোট ২৮ লাখ ২১ হাজার ৩৭৬টি গাড়ি চলাচল করেছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে গাড়ি চলেছে মাত্র ৩ হাজার ৮৭০টি।
কিন্তু প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে ২০২৫ সালের মধ্যে দৈনিক গাড়ি চলাচলের সংখ্যা ধরা হয়েছিল ১৯ হাজার ৬৬৯টি। সে হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার ৭৯৯টি কম গাড়ি টানেল ব্যবহার করছে — যা লক্ষ্যের পাঁচ ভাগের এক ভাগেরও কম।
দুই বছরে টানেল থেকে আয় হয়েছে ৮০ কোটি ৫ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে আয় ১০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। তবে সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাবে দৈনিক গড় পরিচালন ব্যয় প্রায় ৩৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ, আয় ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম।
১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ টানেলের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকারের তহবিলের পাশাপাশি চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। এই ঋণের সুদ ও কিস্তি পরিশোধ করছে সরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কর্ণফুলী টানেল অবকাঠামো উন্নয়নে বড় সাফল্য হলেও এর অর্থনৈতিক টেকসইতা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে শিল্পায়ন ও পর্যটন কার্যক্রম বাড়লে ভবিষ্যতে টানেল ব্যবহারে প্রবৃদ্ধি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৭ বছর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল। কিন্তু যে ক্ষতি করে গেছে, তা আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে অন্তত তিন সতেরো ৫১ বছর।
