সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এল-ফাশারে সংঘটিত সহিংসতা ও নির্যাতনের অভিযোগে দেশটির আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) তাদের কয়েকজন যোদ্ধাকে গ্রেফতার করেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, দারফুর ও পার্শ্ববর্তী কোরদোফান অঞ্চলে ভয়াবহ পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছিল আরএসএফ, রোববার দীর্ঘ ১৮ মাসের অবরোধ শেষে এল-ফাশার দখল করে। শহরটি দখলের পর আরএসএফের বিরুদ্ধে গণহত্যা, শিশু হত্যা, বেসামরিক মানুষকে মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
বিবৃতিতে আরএসএফ জানিয়েছে, এল-ফাশার দখলের সময় সংঘটিত অনিয়মের অভিযোগে কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন আবু লুলু, যিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করতে দেখা গেছে। আরএসএফ দাবি করেছে, তাদের আইনের আওতায় ন্যায্য বিচার দেওয়া হবে।
এল-ফাশারের দখলের পর শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকায় হতাহত ও পালানো মানুষের সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন। জাতিসংঘের তথ্যে, রোববার থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ এল-ফাশার থেকে পালিয়েছে। আরও প্রায় ১ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ এখনও শহরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
সত্যতা যাচাই করা ভিডিওতে দেখা গেছে, আবু লুলু ও আরএসএফের অন্যান্য সদস্যদের নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা এবং মৃতদেহের পাশে উল্লাস করতে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, এল-ফাশারে আরএসএফ প্রবেশের পর গণহত্যার রিপোর্ট পাওয়া গেছে এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি এখনও চলছে। তিনি বলেন, উত্তর দারফুরের সাম্প্রতিক ঘটনায় আরএসএফের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবের স্যাটেলাইট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দেহাবশেষ এবং রক্তের দাগের মতো বিবর্ণ চিহ্ন লক্ষ্য করা গেছে।
আরএসএফ অভিযোগ করেছে, সেনাবাহিনী উত্তর কোরদোফানের একটি বিদ্যালয়ে ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক নিহত হয়েছেন। তবে সেনাবাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এল-ফাশারের দখলের মাধ্যমে আরএসএফ দারফুরের পাঁচটি রাজ্য রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, কার্যত দেশকে পূর্ব-পশ্চিম অক্ষ বরাবর বিভক্ত করেছে। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, সহিংসতা দারফুর ছাড়িয়ে কোরদোফানেও ছড়িয়ে পড়ছে, যা নতুন সামরিক সংঘাতের ইঙ্গিত দেয়।







