গত ৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে। অভিযোগকারী পলি আক্তার সাটুরিয়া উপজেলার মহিলা দলের সভাপতি।
অভিযোগকারী পলি আক্তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন,
বাদিনী একটা সহজ-সরল, শান্তিপ্রিয়, নিরীহ আর আইন মানা মেয়ে। অন্যদিকে আসামী একটা পরনারী লোভী, ধর্ষক, প্রতারক, হার্মাদ আর আইন না মানা লোক। বাদিনীর বাবা বিএনপির মানিকগঞ্জ জেলার একটা বড় নেতা ছিলেন। আসামী ছাত্রদলের একটা সক্রিয় কর্মী।
রাজনৈতিক সংযোগের কারণে আসামী আগে আগে বিভিন্ন সময় বাদিনীর বাবার সঙ্গে রাজনৈতিক কাজে তাদের বাড়িতে যাতায়াত করতো। সেই যাতায়াতের সুবাদে আসামী বাদিনীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু বাদিনী সেটা প্রত্যাখ্যান করায় আসামী অনেক অনুরোধ করে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয়। বাদিনী ঘৃণা করে সেটা প্রত্যাখ্যান করায় আসামী তার উপর রাগ করে, তাকে ব্ল্যাকমেল করে তার ইজ্জত নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করে। বাদিনী তখন ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি।
একসময় আসামী প্ল্যান করে খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে ০৩/০৬/২০২৫ তারিখে বাদিনীকে ব্ল্যাকমেইল করে নবীনগর স্মৃতি সৌধে বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। সহজ-সরল বাদিনী আসামীর উপর বিশ্বাস করে সেখানে যায়। তখন নারী লোভী আর প্রতারক আসামী চালাকি করে বাদিনীকে একটা প্রাইভেট কারে তুলে নেয়, নাকের সামনে নেশার জিনিস ধরে তাকে অজ্ঞান করে। তারপর অজ্ঞান অবস্থায় ঢাকার আজিমপুর এলাকার একটা অজানা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ধর্ষণ করে, আর সেই ধর্ষণের ভিডিও করে নিজের কাছে রেখে দেয়।
বাদিনীর জ্ঞান ফিরলে সে আসামীকে এই অন্যায় কাজের কথা জিজ্ঞাসা করে। আসামী তাকে হুমকি দিয়ে বলে, “তুমি আমার সহজ প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বড় অপরাধ করেছ, তাই চালাকি করে তোমাকে ভোগ করে আমার অনেক দিনের ইচ্ছা পূরণ করলাম। ধর্ষণের ভিডিও আমার মোবাইলে রেকর্ড করেছি। যদি এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করো, তাহলে ফেসবুকসহ সব ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছেড়ে দিয়ে ভাইরাল করে দেব।” এইরকম ভয় দেখিয়ে দুর্বল আর অসুস্থ বাদিনীকে একটা অজানা প্রাইভেট কারে করে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।
বাদিনী ব্যাপারটা তার বাবাকে বলে। বাবা এই ভয়ঙ্কর ঘটনা শুনে হার্ট অ্যাটাক করে ২৪/০৭/২০২৫ তারিখে মারা যান। সহজ-সরল বাদিনী তার জীবনে ঘটে যাওয়া এই ভয়ানক ঘটনা আর বাবার শোকে একা বাড়িতে খুব কষ্ট করে জীবন কাটাচ্ছে।
এর মাঝে দুর্দান্ত স্বভাবের নারী লোভী আসামী হঠাৎ ঘটনার তারিখ আর সময়ে বাদিনীর বাড়িতে এসে তাকে একা পেয়ে কুশল জিজ্ঞাসা করে। বাদিনী আসামীকে তাদের বাড়িতে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে, আর নিজের শোবার ঘরে ঢোকে। আসামী সেই ঘরে ঢুকে বীরের মতো ধাক্কা দিয়ে তাকে খাটে চিত করে ফেলে দেয়, বাঁ হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে সালোয়ার খুলে ফেলে, জানে মারার ভয় দেখিয়ে আবার জোর করে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ঘটনাটা যদি বাদিনী কাউকে বলে, তাহলে তাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে আসামী বীরের মতো ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যায়।
অসহায় বাদিনী এই ব্যাপার নিয়ে সাটুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা নেয় না, বরং ট্রাইব্যুনালে মামলা করার পরামর্শ দেয়। বাদিনীর কাছে ঘটনা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে আর দিতে পারবে। বাদিনী বিচার চায়।







