আমেরিকার নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউ ইয়র্ক সিটি এবার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে শহরের নবনির্বাচিত মেয়র হয়েছেন জোহরান মামদানি। তিনি একাধারে নিউ ইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র, প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনি এবং প্রথম ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট মেয়র। শূন্য থেকে রাজনীতি শুরু করে এই তরুণ রাজনীতিবিদ জনগণের আস্থা অর্জন করে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন।
আগামী বছরের ১ জানুয়ারি তিনি মেয়র হিসেবে শপথ নেবেন। ইতিমধ্যে নতুন দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতির পাশাপাশি চলছে তার বাসস্থানেরও প্রস্তুতি। বর্তমানে মামদানি ও তার স্ত্রী রমা দুওয়াজি নিউ ইয়র্কের কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়া এলাকায় ৮০০ বর্গফুটের এককক্ষবিশিষ্ট ভাড়া অ্যাপার্টমেন্টে থাকছেন।
‘দ্য নিউ ইয়র্কার রেডিও আওয়ার’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মামদানি জানান, তাদের অ্যাপার্টমেন্টটি বেশ ছোট এবং মাঝে মাঝে অসুবিধাজনক। তিনি বলেন, সিংকে ছিদ্র হয়ে পানি পড়লে বাড়ির তত্ত্বাবধায়কের সহায়তা নিতে হয়েছে, যা বেশ ঝামেলার ছিল।
তিনি আরও জানান, নিয়ম অনুযায়ী সেখানে হিটিং সিস্টেম ও গরম পানির ব্যবস্থা থাকলেও কোনো ওয়াশিং মেশিন বা ড্রায়ার নেই; ভবনের সাধারণ লন্ড্রি রুমই ব্যবহার করতে হয়। ১৯২৯ সালে নির্মিত এই অ্যাপার্টমেন্টটিতে একটি লিফটও রয়েছে—যা অ্যাস্টোরিয়ার মতো এলাকায় বিরল।
তবে এখন মামদানির সামনে নতুন সুযোগ—নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়রের সরকারি বাসভবন ‘গ্রেসি ম্যানশন’-এ ওঠার। তবে ৩৪ বছর বয়সি এই মেয়র এখনও সিদ্ধান্ত নেননি তিনি সেখানে যাবেন কি না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কোথায় থাকব, তা এখনো ঠিক করিনি।”
যদি তিনি আপার ইস্ট সাইডে অবস্থিত ২২৬ বছর পুরোনো এই সরকারি প্রাসাদে ওঠেন, তবে তার জন্য অপেক্ষা করছে এক বিলাসবহুল জীবনযাপন। ১১ হাজার বর্গফুটের এই ঐতিহাসিক ভবনে রয়েছে ঝলমলে আয়না, দৃষ্টিনন্দন ঝাড়বাতি, মেহগনি কাঠের দরজা, ডুমুর ও আপেলগাছের সারি এবং একটি বড় সবজির বাগান।
‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর ভাষায়, গ্রেসি ম্যানশন দেখতে যেন লেমন রঙের এক বিশাল কেকের মতো, যার বারান্দা থেকে দেখা যায় মনোরম ইস্ট রিভার। নিরাপত্তার জন্য চারপাশে রয়েছে উঁচু দেয়াল, সিসিক্যামেরা এবং পুলিশ পাহারা। সংবাদমাধ্যমটির মতে, নিরাপত্তা ও সুবিধার কারণে প্রায় সব নিউ ইয়র্ক মেয়রই শেষ পর্যন্ত গ্রেসি ম্যানশনেই বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অ্যাস্টোরিয়ার সাধারণ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে আপার ইস্ট সাইডের এই ঐশ্বর্যশালী প্রাসাদে স্থানান্তর—জোহরান মামদানির জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে।







