আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় পলাতক শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পরও নির্ধারিত শুনানিতে আদালতে হাজির না হওয়ায় তাকে তলব করেছিল ট্রাইব্যুনাল। পরে তিনি উপস্থিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
ট্রাইব্যুনাল তার ক্ষমা গ্রহণ করে পান্নাকে স্টেট ডিফেন্সের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় এবং তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে নতুন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করে।
পটভূমি: কীভাবে জটিলতা তৈরি হলো
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত গুম, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় পান্নাকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেছিল ট্রাইব্যুনাল। ওই দুই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি ছিল বুধবার সকাল ১১টায়। কিন্তু তিনি আদালতে না আসায় ট্রাইব্যুনাল তাকে তলব করে।
দুপুরে তিনি হুইলচেয়ারে করে আদালতে হাজির হন এবং বলেন তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে চিঠিও পাঠিয়েছেন বলে জানান।
ট্রাইব্যুনালে তিরস্কার ও প্রশ্ন
পান্নাকে উদ্দেশ করে ট্রাইব্যুনাল বলেন—
“আপনি শেখ হাসিনার পক্ষে নিয়োগ পেয়েছেন। আপনি না এলে শুনানি ব্যাহত হয়। আপনি আগ্রহ দেখিয়েই আবেদন করেছিলেন। দায়িত্ব না নিতে চাইলে সরাসরি ট্রাইব্যুনালকে বলতে হতো।”
এ সময় ট্রাইব্যুনাল তার সাম্প্রতিক ভিডিও বিবৃতির বিষয়েও প্রশ্ন তোলে। সেখানে পান্না বলেছিলেন—‘যে আদালতের প্রতি শেখ হাসিনার আস্থা নেই, সেই আদালতে তাকে ডিফেন্ড করা আমার উচিত নয়; এটা অনৈতিক।’
ট্রাইব্যুনাল জানতে চায়—তিনি কি এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন?
জবাবে পান্না সংক্ষেপে বলেন—“আমি আনকন্ডিশনালি অ্যাপোলজি চাই।”
শেষ পর্যন্ত পদ ছাড়লেন পান্না
ট্রাইব্যুনাল যখন জানতে চায় তিনি কি শেখ হাসিনার পক্ষে মামলাটি লড়তে চান, পান্না স্পষ্টভাবেই ‘না’ বলেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল নতুন স্টেট ডিফেন্স নিয়োগের বিষয়ে তার মতামত জানতে চায়। কোনো নাম প্রস্তাব না করায় ট্রাইব্যুনাল মো. আমির হোসেনকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয়।
আমির হোসেন এর আগেও শেখ হাসিনার পক্ষে ট্রাইব্যুনালে লড়েছেন।
