আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ১১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে। ওইদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল জানাবেন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। রোববার কমিশনের সভায় এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হতে পারে।
তফসিল ঘোষণার আগে ১০ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। ৯ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গেও সিইসির সাক্ষাৎ নির্ধারিত আছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে সাক্ষাতের জন্য চিঠি পাঠায় ইসি।
ইসি সূত্র জানায়, সিইসি ভাষণের খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত করেছেন। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ থেকে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান পর্যন্ত ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হবে। এছাড়া ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করা হবে।
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, তফসিল ঘোষণার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। বিটিভি ও বেতারে সিইসির রেকর্ডকৃত ভাষণ প্রচার করে তফসিল ঘোষণা হবে।
ভোট ৮ ফেব্রুয়ারি, সময় বাড়তে পারে
তফসিল থেকে ভোট গ্রহণের মাঝে দুই মাসের মতো বিরতি রাখা হচ্ছে। ভোটগ্রহণের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি (রোববার)। একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য ভোটগ্রহণের সময় আধঘণ্টা বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে—সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
মনোনয়ন ও আপিলের সময়সূচি (খসড়া)
তফসিল ঘোষণা: ১১ ডিসেম্বর
মনোনয়ন জমা: ২৫ ডিসেম্বর
যাচাই-বাছাই: ২৬–৩০ ডিসেম্বর
আপিল: ৩১ ডিসেম্বর–৪ জানুয়ারি
আপিল নিষ্পত্তি: ৫–১০ জানুয়ারি
প্রার্থিতা প্রত্যাহার: ১১–১২ জানুয়ারি
প্রতীক বরাদ্দ: ১৩ জানুয়ারি
ভোটগ্রহণ: ৮ ফেব্রুয়ারি
প্রতীক বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গে প্রচার শুরু করা যাবে না; আচরণবিধি অনুযায়ী ভোটের তিন সপ্তাহ আগে থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার চালানো যাবে।
পোস্টাল ব্যালটে নতুন ব্যবস্থা
এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো প্রবাসী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকছে। তফসিল ঘোষণার পরই প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পাঠানো হবে। প্রাথমিক পরিকল্পনায় ১০ লাখ ব্যালট ছাপানোর কথা থাকলেও কম সাড়া পাওয়ায় তা ৫ লাখে নামানোর চিন্তা করছে ইসি। নিবন্ধন ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
এবার পোস্টাল ব্যালটে নির্দিষ্ট আসনের প্রতীক নয়, বরং জাতীয় নির্বাচনের সব প্রতীক একত্রে যুক্ত থাকবে।
কেন্দ্র ও ভোটার সংখ্যা
আগামী নির্বাচনে মোট ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন ভোটার ভোট দেবেন। এজন্য ৪২ হাজার ৭৬৬টি কেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫টি ভোটকক্ষ স্থাপন করা হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগে পরিবর্তন আসতে পারে
বিভিন্ন সংলাপে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের পরিবর্তে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করার প্রস্তাব এসেছে। পরীক্ষামূলকভাবে কিছু অঞ্চলে এ ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা করছে ইসি।
সিইসির ভাষণে যা থাকতে পারে
মুক্তিযুদ্ধ থেকে জুলাই অভ্যুত্থান পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অঙ্গীকার
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের প্রতি আহ্বান
গণভোট ও নির্বাচনে সক্রিয় অংশগ্রহণে উৎসাহ
