চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড–পাহাড়তলী–আকবরশাহ) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য ধানের শীষের প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনকে ঘিরে দলীয় পর্যায়ে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চসিক মেয়র এম মনজুর আলমের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ আলাপচারিতার ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তৃণমূল নেতাকর্মীরা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, মনোনয়ন নিয়ে আগেই তৃণমূলে অসন্তোষ ছিল। কাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি এম মনজুর আলমের সঙ্গে তার অফিসকক্ষে খোশগল্পে মগ্ন ছিলেন। জানা গেছে, একটি জানাজা উপলক্ষে কাট্টলীতে গিয়ে মনজুর আলমের অনুরোধে তিনি তার অফিসে যান এবং দীর্ঘ আলাপের পর এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এম মনজুর আলম আওয়ামী লীগমুখী রাজনীতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত ব্যক্তি। শেখ রাসেলের নামে স্টেডিয়াম নির্মাণ, জমি দখলের অভিযোগ, রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন, এমনকি শেখ মুজিবকে “আল্লাহর ওলি” আখ্যা দেওয়া— এসব কারণে তিনি ব্যাপক সমালোচিত।
এমন বিতর্কিত একজন আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর ঘনিষ্ঠতার ঘটনায় তৃণমূলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সীতাকুণ্ড পৌরসভা বিএনপির সদস্যসচিব ছালে আহাম্মদ সওদাগর অভিযোগ করেন, কাজী সালাউদ্দিন প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছেন এবং ত্যাগী নেতাদের বহিষ্কার করে সংগঠনকে অস্থিতিশীল করেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত থাকায় ১৭ বছরে তিনি কখনো গ্রেপ্তার হননি।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালিন বলেন, আওয়ামী লীগমুখী মনজুর আলমের অফিসে বসে চা খাওয়ার দৃশ্য জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যবসায়িক স্বার্থও তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন— এমন অভিযোগও তোলা হয়েছে।
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস মিয়া জানান, ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থী হয়েও আওয়ামী লীগ নেতার অফিসে যাওয়ার ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। এদিকে, সম্প্রতি উপজেলা বিএনপির জরুরি সভায় কাজী সালাউদ্দিনের ভাই কাজী মহিউদ্দিনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগে।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, সীতাকুণ্ডে বিএনপিকে জিততে হলে কাজী সালাউদ্দিনকে পরিবর্তন করা জরুরি। তারা মনে করেন, তার পরিবর্তে অধ্যাপক আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দিলে আসনটি সহজেই বিএনপির নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং এটি তারেক রহমানকে উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।







