রাজনৈতিক অঙ্গনের বিভিন্ন অংশ—জাতীয় পার্টির একাধিক গ্রুপসহ কয়েকটি দলকে নিয়ে একটি নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি পার্টি সেন্টারে এ জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জোটের নাম ঠিক করা হয়েছে ‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক জোট’।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জোটটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং জাতীয় পার্টি (জেপি)-এর চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তবে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি এখনো জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়নি।
জাতীয় পার্টি বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করেছে। দলটি পূর্ববর্তী কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি সংসদে বিরোধী দলের দায়িত্বও পালন করেছে। ২০০৯ সালে দলটি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অংশও ছিল। এ ছাড়া জেপি দীর্ঘদিন ধরে ১৪ দলীয় জোটের শরিক।
এরশাদের মৃত্যুর পর জিএম কাদের জাতীয় পার্টির সভাপতি হন। পরে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে আরেকটি অংশ আলাদাভাবে কমিটি গঠন করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে জিএম কাদের তার অংশের কয়েকজন নেতাকে অব্যাহতি দেন। পরে অব্যাহতি পাওয়া নেতারা নিজেদের কাউন্সিল করে নতুন কমিটি গঠন করেন, যেখানে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সভাপতি এবং এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব নির্বাচিত হন।
গত ১৪ জুলাই এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন অংশের নেতাদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সমন্বয়ের চেষ্টা শুরু হয়। সেই উদ্যোগ থেকেই নতুন জোট গঠনের ধারাবাহিকতা তৈরি হয়েছে।
নতুন জোটে জাতীয় পার্টি (আনিস), জাতীয় পার্টি (রওশন) ও জাতীয় পার্টি (জেপি)-এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি দল যুক্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। সম্ভাব্য দলগুলোর মধ্যে রয়েছে—জনতা পার্টি, মুসলিম লীগের একটি অংশ, এনপিপির একটি অংশ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির একটি অংশ, বাংলাদেশ ইসলামিক জোট, জাতীয় সংস্কার জোট, মানবাধিকার পার্টি, জাগপার একটি অংশ, বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, পিস অ্যালায়েন্স, ন্যাপ ভাসানীর একটি অংশ, বাংলাদেশ গণঅধিকার পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টি ও গণতান্ত্রিক জোট বাংলাদেশসহ জাতীয় পার্টির আরও কয়েকটি খণ্ডিত অংশ। ভবিষ্যতে জোটে আরও দল যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
তবে জাতীয় পার্টি এবং জেপি ছাড়া অন্যান্য দলগুলো নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত নয় এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত।
জোট গঠনের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আমার দেশ-কে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলগুলোকে একত্রিত করে এ জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোন কোন দল চূড়ান্তভাবে যুক্ত হবে, তা এখনো নির্ধারিত নয়—আলোচনা চলছে। আজ সোমবার জোটের আত্মপ্রকাশ হবে। জোটকে আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি এই প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছে।
