রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ ছাত্রাবাসে মাদক সেবন ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার রাতে সংঘর্ষের পর আহতদের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান রানাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রবিবার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর শামিমা ইয়াসমিন জানান, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত একমাত্র ছাত্রাবাসটি এখনও পুরোপুরি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত একজন শিক্ষার্থী আইসিইউতে আছে বলে তিনি জানান। সংঘর্ষের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি শুরু করেছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। পাশাপাশি ছাত্রাবাসটি বন্ধ করার চিন্তা-ভাবনা করা হলেও চলমান পরীক্ষার কারণে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
কলেজ শিক্ষার্থীরা জানান, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোরশেদ আলম তরুণ–সদস্য সচিব সেলিম হোসেন গ্রুপ এবং ‘সুইডেন আসলাম’ গ্রুপের মধ্যে মাদক সেবন, বহিরাগত রাখা ও চাঁদাবাজি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। শনিবার রাতে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ বাধে।
গুরুতর আহতদের মধ্যে আছেন সাকিবুল হাসান রানা (বিজ্ঞান বিভাগ, সেশন ২০২৪–২৫), হৃদয় আহমেদ (মানবিক বিভাগ, সেশন ২০২৪–২৫) এবং আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাত (মানবিক বিভাগ, সেশন ২০২৫–২৬)। অভিযোগ রয়েছে, জান্নাত ছাত্রদলের একটি প্রভাবশালী গ্রুপের সহায়তায় তেজগাঁও কলেজ ছাত্রাবাসে অবস্থান করতেন।
হলের শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, তরুণ–সেলিম গ্রুপের সক্রিয় সদস্য মোমেন পালোয়ান আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি তরুণ গ্রুপের প্রভাব ব্যবহার করে ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার করছেন এবং মাদক সেবনসহ বহিরাগতদের নিয়ে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত আছেন। এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়া হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে অপমানিত করা হয়। ভর্তি বাণিজ্য থেকে শুরু করে ফর্ম পূরণের বাণিজ্যেও ছাত্রদলের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
শনিবার রাতের সংঘর্ষের পর পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ভোর পর্যন্ত ছাত্রাবাসে অবস্থান করে। ঘটনার পর পুরো ক্যাম্পাসে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
