লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছে আরাফাতের ময়দান। বৃহস্পতিবার সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ ময়দানে অবস্থান করবেন বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশ থেকে আসা লাখ লাখ মুসলমান। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
এর আগে বুধবার মিনায় অবস্থান করেন হজযাত্রীরা। সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড় পরে হজের নিয়ত করে তারা মক্কা থেকে মিনায় যান। মিনায় নিজ নিজ তাঁবুর মধ্যে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত করেন। আজ ফজরের নামাজ আদায় করেই তারা আরাফাতের ময়দানে যেতে শুরু করেন।
আজ দুপুরে মসজিদে নামিরা থেকে প্রচারিত হবে হজের খুতবা। হজযাত্রীরা এ খুতবা শুনবেন, পরে জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন। এবার মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেবেন মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ। এ খুতবা বাংলাসহ ২০টি ভাষায় অনুবাদ করা হবে।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে হজ একটি। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান সব মুসলমান পুরুষ ও নারীর ওপর জীবনে একবার হজ ফরজ। জিলহজ মাসের নির্দিষ্ট দিনে (মূলত ৯ জিলহজ) হজের নিয়তসহ ইহরাম পরিধান করে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা এবং পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ করাকেই হজ বলা হয়। তবে ৮ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত হজের আরো কিছু ওয়াজিব ও সুন্নত কার্যক্রম পালন করতে হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার মক্কা থেকে এহরাম বেঁধে হজের নিয়তে তালবিয়া পাঠ করতে করতে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিনায় নির্ধারিত তাঁবুতে অবস্থান নেন হজযাত্রীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই সৌদি কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত বাসে সেখানে হজযাত্রীদের নেওয়া হয়। লাখ লাখ হজযাত্রীর পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে তাঁবুর শহর মিনা। সেখানে অবস্থান করা হজের সুন্নাত। পবিত্র হজের তিনটি ফরজের প্রথম কাজটি হলো- এহরাম বাঁধা। বাকি দুটি হলো- আরাফাতের ময়দানে অবস্থান ও তাওয়াফে জিয়ারাহ।
সৌদির বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রমতে, এ বছর বিশ্বের ৭১টির মতো দেশ থেকে ১৪ লাখ ৭০ হাজারের বেশি হজযাত্রী এসেছেন। এর সঙ্গে দেশীয় হজযাত্রী আছেন কয়েক লাখ। সুষ্ঠু ও আরামদায়কভাবে হজ পালনের জন্য সৌদি আরব সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। হজযাত্রীদের মক্কা-মিনা-আরাফাত ময়দানে যাতায়াত, মিনা ও আরাফাতে তাঁবু ব্যবস্থাপনা, খাবার সরবরাহ, চিকিৎসাব্যবস্থা, কুলিং ফ্যান এবং স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাকর্মীসহ নানা সেবা দিতে প্রস্তুত সৌদি সরকার।