টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি- কোনো সংস্করণেই যেন নিজেদের জাত চেনাতে পারছে না বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ওয়ানডে অধিনায়কত্বের ব্যাটন নাজমুল হোসেন শান্তর হাত থেকে মেহেদি হাসান মিরাজের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী এক বছরের জন্য নেতৃত্বভার পাওয়া মিরাজ গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানান, দলের উন্নতির জন্যই তার কাঁধে এসেছে অধিনায়কত্বের দায়িত্বভার। শ্রীলঙ্কা সফরে দেশ ছাড়ার আগে অধিনায়কত্ব নিয়ে কথা বলেন মিরাজ। সেখানে তিনি আরো জানান, অধিনায়কত্বের দায়িত্বভার পরিবর্তন হওয়ায় নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে কোনো ধরনের বিভেদ তৈরি হবে না।
গত পরশু রাতে হুট করে ওয়ানডে অধিনায়কত্বের দায়িত্বভার মিরাজের কাঁধে তুলে দেয় বিসিবি। বোর্ড পরিচালকদের অনলাইন সভায় আসে এই সিদ্ধান্ত। তখনই অধিনায়কত্বের ব্যাপারে জেনেছেন মিরাজ। তার কথায়, ‘আমাকে গতকাল (পরশু) ফাহিম স্যার ডেকে নিয়ে বলেছেন, তোমাকে আমরা দায়িত্ব দেওয়ার চিন্তা করছি। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেহেতু সামনে খেলা আছে, ওয়ানডে দল ঠিক করতে হবে।’ হুট করে দায়িত্ব পাওয়া মিরাজের এখন লক্ষ্য আগামী ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে পুরো দল গুছিয়ে তোলা।
এ নিয়ে মিরাজের ভাষ্য ছিল, ‘সামনে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আছে। যেহেতু দল হিসেবে আমরা এখন সংগ্রাম করছি, তাই বোর্ড হয়তো ভেবেছে একটা জায়গায় দাঁড় করাই দলটাকে। এখন সময় এসেছে ওয়ানডে দলকে এক জায়গায় দাঁড় করানোর।’ ওয়ানডে সংস্করণ থেকে বিদায় নেওয়া মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সার্ভিস পাচ্ছে না বাংলাদেশ। আরেক সিনিয়র সাকিব আল হাসান আদৌ জাতীয় দলের জার্সিতে ফের খেলবেন কি না সেটা নিয়েও আছে শঙ্কা। ফলে এখন বিসিবিকে দল নিয়ে করতে হবে খানিকটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এ নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘দুজন সিনিয়র ক্রিকেটার অবসর নিয়েছেন। কারা সুযোগ পাবেন, আমার মনে হয় এক বছরের মধ্যে সেট করা যাবে।’
শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হোসেন জানান, যাকেই দায়িত্ব দেওয়া হোক, তাকে যেন লম্বা সময় দেওয়া হয়। অধিনায়কত্বের ব্যাটন পরিবর্তনের পর শান্তর সঙ্গে কথা হয়েছে কি না এবং বোঝাপড়া কেমন থাকবে সে প্রশ্নের জবাবে মিরাজ বলেন, ‘কথা হয়েছে। ওর সঙ্গে ছোটবেলা থেকে ক্রিকেট খেলছি। অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে একসঙ্গে আছি। আমাদের মনে হয়, অধিনায়ক তেমন ম্যাটার করে না। দল হয়ে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ।’ কী আলোচনা হয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তরে তার ভাষ্য ছিল, ‘দুজনে আলোচনা করেছি বাংলাদেশকে কত দূর নিয়ে যেতে পারি।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমরা বাংলাদেশ দলকে একটা জায়গায় দাঁড় করাতে চাই। একটু খারাপ সময় যাচ্ছে। আশা করি এটা দ্রুত কেটে আসবে ইনশাল্লাহ।’
অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত ছিলেন কি না- এমন প্রশ্ন হলে মিরাজ জানান, ‘এখন তো আমাদের অবশ্যই দায়িত্ব নেওয়ার সময় এসেছে। যথেষ্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি, প্রায় ৮-৯ বছর ধরে খেলছি।’ অধিনায়কত্ব করার সময় পূর্বসূরি অধিনায়কদের অনুসরণ করার প্রত্যয়ও ছিল মিরাজের কণ্ঠে। এ নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। বিশেষ করে কীভাবে অধিনায়কত্ব করেছেন। এই জিনিসগুলো ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। তারা যেভাবে কঠিন সিদ্ধান্ত শক্তভাবে নিতেন, সেই জিনিসগুলো অনুসরণ করেছি। অনেক সময় কঠিন সময়ে শক্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় পক্ষে আসবে, অনেক সময় আসবে না। আপনি সিদ্ধান্তগুলো কীভাবে নিচ্ছেন, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।’