পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ দেশের সাধারণ নাগরিকদের ওপর নানাভাবে জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ভিন্নমতের মানুষদের গ্রেপ্তার করে বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাগারে আটক করে রেখেছিল। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা, সাংবাদিক, আইনজীবী ও বুদ্ধিজীবীদের গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে বন্দি রেখে হয়রানি করেছে। স্বৈরশাসক হাসিনার অগণতান্ত্রিক এবং ইসলাম ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করায় হামলা-মামলা দিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল।
বুধবার ‘নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দল সরকারের বৈধ সমালোচনা করবে, ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দেবে এবং জনগণকে সচেতন করবেÑএটাই স্বাভাবিক। সরকার যদি বিরোধী দলের ইতিবাচক সমালোচনা সহ্য করতে না পারে, তাহলে বুঝতে হবে সেটি গণতান্ত্রিক সরকার নয়। সেটি হলো স্বৈরাচারী ও জালিম সরকার। দুঃখজনকভাবে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ছিল এমনই একটি জালিম সরকার।
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, পতিত সরকারের আমলে দেশে গুম, খুন, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণ ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। তাদের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় বহু মানুষ। সীমাহীন শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কারণে অকারণে বহু মানুষকে গুম ও খুন করা হয়েছে। হাজার হাজার নারী-শিশু ধর্ষিতা হয়েছে। গত জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। পঙ্গু করা হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার নিরীহ মানুষকে। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়ে এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
দিবসটিতে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং ওআইসিসহ সব শান্তিকামী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পক্ষে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান গোলাম পরওয়ার। সেই সঙ্গে পতিত সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হওয়া বিরোধী দলের যেসব নেতাকর্মী, সাংবাদিক, আলেমসহ এখনো আটক আছেন, তাদের সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াতের এই নেতা।